Header Ads

Header ADS

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যায়ণঃ সুচনা (১ম পর্ব)

 

রাষ্ট্র, অরাষ্ট্রীয় সত্তা এবং ব্যক্তির মধ্যকার সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক অনুসন্ধানই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যায়নের মূল্য উদ্দেশ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ এবং মানবাধিকার সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক তাগাদা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক, শিক্ষার্থী ও নীতি-নির্ধারকদের ভিতরে IR পাঠ্যক্রমটিকে নিয়ে নানান যুক্তিতর্ক ও প্রশ্ন উদিত হচ্ছেযেমনঃ কেন এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে তাদের ডেলিগেট পাঠিয়ে থাকেন? কিভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যেমনঃ জাতিসংঘ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্ট কাজ করে থাকে


কিভাবে এই সংস্থাগুলো একটা রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে সংঘটিত বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, আইনগত ও মানবিক সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করেন এবং এই সমস্যাগুলোর সমাধান কল্পে তাদের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন? এছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কোন তত্ত্বগুলো আমাদেরকে বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন জরুরী বিষয়াবলি যেমনঃ জীবন পরিবেশগত সমস্যা, মানবিক বিপর্যয়, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, বিভিন্ন কঠিন ব্যাধি যেমনঃ এইডস ও করোনা ভাইরাস, পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার এবং বানিজ্য দ্বৈরথ ইত্যাদি বিষয়াবলি বিশ্লেষণে বেশি উপযোগী? এবং কিভাবে আমরা বৈশ্বিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্বের সঠিক প্রয়োগ ঘটাতে পারি?

উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে হলে প্রথমেই আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ততত্ত্বগুলোর গুরুত্ব স্বীকার করে নিতে হবেসাধারণভাবে IR এর তত্ত্বগুলি তিনটি মৌলিক কাজ করে থাকে যথাঃ

·        কিভাবে আন্তর্জাতিক আইন-কানুন একটি রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনীতে প্রভাব বিস্তার করে তা বিশ্লেষণ করার ভিত্তি তৈরি করে দেয়;

·        ভূ-রাজনৈতিক পরিকাঠামোর পরিবর্তন ও ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা কীভাবে রাষ্ট্রীয় আচরণে প্রভাব ফেলে তা বুঝতে সাহায্য করে থাকে; এবং

·        কিভাবে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ঘটানো যায়? কিভাবে সমাজে সমতা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব তার রূপরেখা আমাদের দিয়ে থাকে

সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে গেলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তত্ত্বগুলি আমাদের বাস্তব সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করেএছাড়াও ঐতিহাসিক এবং ব্যবহারিক জ্ঞানের ভিত্তিতে উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করে,  পাশাপাশি নিজেদের মতাদর্শ বিস্তারের সহায়তা করে

বর্তমান বিশ্বে নীতি-নির্ধারকেরা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় ও প্রমোশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিল ও জরুরি বিষয়ে সামগ্রিক মতানৈক্য অর্জনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন যেমন ৯/১১ পরবর্তী বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সামরিক নীতি তার অনেক মিত্র রাষ্ট্রের কাছেই গ্রহণযোগ্যতা পায়নিতবুও সে রাষ্ট্রগুলোকে অনেকাংশেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি দ্বারা প্রভাবিত হতে দেখা গেছে অর্থাৎ অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই মিত্র রাষ্ট্রগুলোর বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় শান্তিপূর্ণ ও অ-সামরিক পন্থাগুলো ব্যবহার করার বদলে সামরিক আগ্রাসন কি সম্মতি দিতে বাধ্য হয়। 

পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক আগ্রাসন আন্তর্জাতিক জেনেভা কনভেনশনের পরিপন্থী হওয়ায়, বিশেষত আবু-গারিব ও গুয়ান্তানামো বে তে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে অনেকেই যুদ্ধ অপরাধের সাথে তুলনা করে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধাপরাধের দোষে দায়ী করে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা যদিও নিজেদেরকে জেনেভা কনভেনশনের অনেক বড় অংশীদার হিসেবে দাবী করে, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের এহেন অপরাধকে তারা সর্বাংশে এড়িয়ে গেছেন বা যেতে বাধ্য হয়েছেন

এভাবেই বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতে রাজনৈতিক ও  নীতি নির্ধারকদের কাছে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অন্যতম কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবর্তিত হয়েছে (যদিও বর্তমান বিশ্বে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনও সন্ত্রাসবাদের মত সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ) এখন সব রাষ্ট্রের  মাঝেই আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা পাশাপাশি ন্যায়বিচার, নীতি-আদর্শ ও মানবাধিকার রক্ষা ও স্বাধীনতা অর্জন একইভাবে চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ হয়ে দাড়াচ্ছে৷ কিভাবে শিক্ষার্থী ও স্কলাররা এই চ্যালেঞ্জিং কাজএ রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করতে পারে, এবং কিভাবে তারা এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় ঐতিহাসিক  ও তাত্বিক বিষয়গুলোকে কার্যকরীভাবে রাষ্ট্রগুলো কাজে লাগাতে পারে তার একটা রূপরেখা তৈরি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যায়ণ

 

অনুবাদকঃ বদিরুজ্জামান 

মূল বইঃ International Relations: The Key Concepts 

 

 

 

 

 

 


No comments

Theme images by rajareddychadive. Powered by Blogger.