Header Ads

Header ADS

ইরাক যুদ্ধ ও ইঙ্গ-মার্কিন বিশেষ সম্পর্ক

G.W. Bush and Tony Blair 

সাধারণত আন্তর্জাতিক সম্পর্কে "বিশেষ সম্পর্ক" বিষয়টি দ্বারা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার রাজনৈতিক, সামাজিক, কুটনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, আইনগত, পরিবেশগত, ধর্মীয়, সামরিক এবং ঐতিহাসিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতাকেই বুঝিয়ে থাকে। ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্সটন চার্চিল ইঙ্গ-মার্কিন সম্পর্কের দৃঢ়তা বুঝাতে এই শব্দটা ব্যবহার করেন। যদিও উভয় দেশেরই অন্যান্য দেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু ইঙ্গ-মার্কিন সম্পর্কের প্রকৃতি অন্য সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। প্রথমে উইড্রো উইলসন ও ললয়েড জর্জ থেকে শুরু হয়ে, চার্চিল ও রুজভেল্ট যে ভিত্তিটা রেখে যায় রোনাল্ড রিগান ও মার্গারেট থ্যাচার সেই সম্পর্ককে দৃঢ় করেন এবং সর্বশেষ জুনিয়র বুশ ও টনি ব্লেয়ার ইঙ্গ-মার্কিন সম্পর্ককে এক বিশেষ পর্যায়ে নিয়ে যান। 


ইরাক যুদ্ধ ও ইঙ্গ-মার্কিন বিশেষ সম্পর্কঃ 


ইরাক যুদ্ধে ইঙ্গ-মার্কিন জোটের পতন বা ব্যর্থতার পিছনে সাধারণত তিনটি মৌলিক কারণ লক্ষণীয়৷ যথাঃ 

  • ইরাক যুদ্ধকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য- উভয় দেশেরই আলাদা জাতীয় স্বার্থ বিদ্যমান ছিলো;

  • যুদ্ধে অন্তর্ভুক্তির হার বা লেভেলের ক্ষেত্রেও এই দুই শক্তির মধ্যে মতপার্থক্য লক্ষণীয় ছিলো; এবং 

  • দুই দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পার্সোনালিটি একে অন্যের থেকে স্বতন্ত্র ছিলো বিধায় রাজনৈতিক স্বার্থের জায়গায় অনেক সংযোজন ঘটে। 


ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার চার্চিল-রুজভেল্টের পর যে-কোন সময়ের চেয়ে ইঙ্গ-মার্কিন সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করেছিলো। ব্লেয়ার, জুনিয়র বুশের মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে সমর্থন করেন, এবং বুশও ব্লেয়ারের প্রস্তাবে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। কিন্তু তাদের এই ব্যক্তিগত স্বার্থের নিরিখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘমেয়াদী বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করে, এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিকাঠামো পরিবর্তনের যে প্রজেক্ট উভয়ে হাতে নিয়েছিলো, তা থেকে অনেকাংশেই উভয়ে পিছিয়ে পড়ে। 


ইরাক কে ঘিরে ইঙ্গ-মার্কিন সম্পর্কঃ 


ব্রিটিশ ও ফরাসি কূটনীতিক সাইক ও পিকোর মধ্যকার সাক্ষরিত সাইকস-পিকো চুক্তির পরোক্ষ ফল হিসেবে আধুনিক মধ্যপ্রাচ্য তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো এই চুক্তির ফসল৷ বর্তমান ইরাক পূর্বে অটোমান সাম্রাজ্যের তিনটি বড় প্রদেশের (বাগদাদ, মসুল ও বসরা) সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রয়োজনে এই তিনটি প্রদেশের সমন্বয়েই ইরাক তৈরি হয়েছে৷ 


বাদশা ফয়সালকে ইরাকের শাসন ক্ষমতায় বসানো হয়। সে আসলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পুতল সরকার হিসেবে কাজ করেছিল। সে ব্রিটিশদের ইরাকের আবিষ্কৃত তেলের খনিগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। তুর্কির এক তেল কম্পানিকে ব্রিটেন কিনে নেয় এবং পরবর্তীতে এই কম্পানি সমগ্র ইরাকের তেল উত্তলনের দায়িত্ব গ্রহণ করে। 


কিন্তু সাধারণ ইরাকিরা এভাবে তেল সম্পদ দখলের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে। পরবর্তীতে RAF ইরাকে ফয়সালের বিরুদ্ধে বিপ্লবের ডাক দেন এবং ইরাকের ক্ষমতা দখল নেন। ইরাককে রাজতন্ত্রের বদলে প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তা সত্বেও সরকার  তেলের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের পালে যুক্তরাষ্ট্রও যুক্ত হয়, কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের, বিশেষত ইরাকে তেলের উত্তলন ও সরবারহের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যই ছিলো প্রধান সত্তা। 


ইরাকি সরকারের তেলের উপর নিয়ন্ত্রণ না নিতে পারার প্রধান কারণ ছিলো Iraqi Petroleum Company (IPC)। এছাড়াও ইরাকের বাজেট ও জিডিপির অধিকাংশই এই কম্পানি প্রদত্ত রাজস্বের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু প্রজাতন্ত্র হওয়ায় তারা ব্রিটিশ সরকারের উপর ফয়সালের মত অনুগত ছিলোনা। ফলে  ইঙ্গ-মার্কিন জোটের কাছে এই বর্তমান সরকারকে উৎখাত করা খুব জরুরি হয়ে পরে৷ 


নতুন পুতুল সরকার আবারো ইরাকে পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষার নিশ্চয়তা চুক্তি সম্পাদন করে, কিন্তু সাধারণ ইরাকিরা এই চুক্তির বিরোধীতা শুরু করে। সাধারণ জনগণের চাপে নতুন সরকার বাগদাদ ও স্টারলিং চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে, এবং ইরাকের অধিকাংশ তেলের খনি জাতীয়করণ করে। ফলে, সি আই এ- এই সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানে বিদায় করে। নতুন সরকার আবারো ইঙ্গ-মার্কিন জোটের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে এবং বড় খনিগুলোকে ব্রিটিশ তেল কম্পানির অধীনস্হ করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই যখন এই নতুন সরকার ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তখন থেকে এই সরকারও ইঙ্গ-মার্কিন জোটের রেড লিস্টে পড়ে যায়। এবং অবশেষে সাদ্দাম হোসেনকে পাতানো সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইরাকের শাসক হিসেবে ক্ষমতায় বসানো হয়৷ কিন্তু সাদ্দাম হোসন প্রশাসনকে পরবর্তীতে ক্ষমতাচ্যুত করানো ইঙ্গ-মার্কিন জোটের পক্ষে এত সহজ ছিলো না।


যাইহোক, ১৯৭৩ সালে চতুর্থ আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলের পক্ষ নেয়ায় আরব দেশগুলো তেল অবরোধ জারি করে। পাশাপাশি, অল্প কিছু তেলের খনি বাদে ইরাকের সকল খনিকেই রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। আরব রাষ্ট্রগুলো বুঝতে পারে, ইঙ্গ-মার্কিন জোটের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তেলকে বড় অস্ত্র হিসেবে তারা ব্যবহার করতে পারে। জাতীয়করণের ফলে, বিদেশি কম্পানিগুলোকে ইরাকের প্রশাসনের তৈরিকৃত ছক অনুযায়ী তেল উত্তলন ও বিক্রি করতে হত৷ 


কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, যেখানে ইঙ্গ-মার্কিন জোটকে অনেক উচ্চ মূল্যে আরব দেশগুলো থেকে তেল আমদানি করতে হত, বিনিময়ে আরব দেশগুলো যে বড় রাজস্ব আদায় করতো তার অধিকাংশই চলে যেত এই জোটের থেকে অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে।"অস্ত্র-পেট্রোডলার চক্র" আরব দেশ ও ইঙ্গ-মার্কিন জোটের মধ্যে চলতে থাকে।  গালফভুক্ত দেশগুলো যেখানে তাদের অর্জিত বিশাল অংকের রাজস্ব পশ্চিমা আর্থিক ও প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতো, সেখানে ইরাকি সরকার এই রাজস্বের একটা বড় অংশ জনগণের জীবন-মান উন্নয়ন; বৃহৎ অবকাঠামো নির্মান; শিল্পায়ন ও শিক্ষা বিস্তারে ব্যবহার করে। 


ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের জনপ্রিয়তা, উন্নয়ন ও তেলের খনিগুলোর উপর একনিষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ- ইঙ্গ-মার্কিন জোটের নীতি নির্ধারকদের ভাবিয়ে তোলে। পাশাপাশি আরো দুটি ঘটনা ঘটে যা মধ্যপ্রাচ্যে এই জোটের স্বার্থে দারুণভাবে আঘাত করে। যথাঃ 

১. ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে ইরানিয়ান বিপ্লব ঘটে এবং মধ্যপ্রাচ্যে এই জোটের সবচেয়ে বিশ্বাসভাজক মিত্র-  শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

২. ইরানিয়ান বিপ্লবের কিছুদিন পরেই কিছু উগ্রবাদী ইসলামিস্ট মক্কা দখল করে, এবং সৌদি রাজপরিবারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা চালায়। যদিও তা ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু এই ঘটনাটি জোটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, কারণ এই সৌদি রাজবংশই এই জোটকে বেশি তেল সরবারাহ করতো, এবং ক্ষমতার ভারসাম্যের ক্ষেত্রেও সৌদি জরুরি ছিলো। 


অবশেষে সাদ্দাম হোসেনের সাম্রাজ্যবাদী মনোভাবের দরুন ইঙ্গ-মার্কিন জোটের কাছে মধ্যপ্রাচ্যের উপর কর্তৃক আরোপের আরো একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়। ১৯৮০ সালে ইরাক ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে সাদ্দাম হোসেনকে ইঙ্গ-মার্কিন জোট সামরিক ও লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করে। এই সহায়তার পিছনে অন্যতম স্বার্থটি হল ইরাক ও ইরানকে সামরিক ও আর্থিকভাবে দুর্বল করে দেওয়া, এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে ইসরায়েল ও গালফ রাষ্ট্রগুলোর প্রাধান্য বৃদ্ধি। 



ইরাক ইরান যুদ্ধের সমাপ্তির দুইবছরের মাথায় সাদ্দাম হোসেন ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত কারণে (এবাদে অর্থনৈতিক বড় কারণ ছিলো) প্রতিবেশি দেশ কুয়েত দখলে নেন। কুয়েত সমুদ্র বন্দর ইরাকের তেল রপ্তানির জন্য সাদ্দাম হোসেনের নিকট খুব জরুরি ছিলো। যুদ্ধের ফলে জাতিসংঘ ইরাকের বিরুদ্ধে রেজুলেশন পাশ করে, এবং কুয়েতকে দখলমুক্ত করতে সমন্নিত সামরিক শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দেন। ফলে গাল্ফ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। যুদ্ধে হেরে সাদ্দাম বাহিনী কুয়েত ত্যাগ করে, কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে ইরাকের উপর যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো তা রদ করার বেলায় ইঙ্গ-মার্কিন জোট ভেটো দেয়। 


ইঙ্গ-মার্কিন জোটের লক্ষ্য ছিলো ইরাককে আর্থিকভাবে দুর্বল করে ফেলা। এটা ছিলো সম্পূর্ণ পূর্ব-পরিকল্পিত। কিন্তু মজার বিষয় হলো, ইরাক যুদ্ধ আসলে গালফ যুদ্ধকেই প্রতিস্থাপন করেছে, অর্থাৎ সাদ্দামকে ক্ষমতা থেকে সরানো এবং ইরাকের উপর বেশি বেশি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ। কিন্তু ইরাক যুদ্ধের ক্ষেত্রে Weapons of Mass Destruction (WMD) তৈরি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসবাদ বিস্তার ইত্যাদিকে ইরাক দখলের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। 


জাতিসংঘের একটা পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া যায় ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল অব্দি প্রায় ২৮০,০০০ বার ইঙ্গ-মার্কিন জোটের বিমান ইরাকের আকাশ সীমায় ওঠানামা করেছে, এবং ইরাকের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোয় ধারাবাহিকভাবে আঘাত করেছে। এই জোট আন্তর্জাতিক আইনের থোড়াই কেয়ার করতো। অবশেষে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ১৯৯৫ সালে কিছু শর্তের অধীনে ইরাককে সামান্য তেল রপ্তানির সুযোগ দেয়া হয়, কিন্তু এই ক্ষেত্রে তেল থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ফান্ডে যাবে, এবং সংস্থাগুলো ইরাকের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করবে। 


২০০১ সালে নিরাপত্তা পরিষদের অপর তিন সদস্য- রাশিয়া, চীন ও ফ্রান্স এবং চতুর্থ দেশ হিসেবে জার্মানি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে উঠিয়ে নিতে জোটের উপর চাপ দিতে থাকে। কিন্তু জোট এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। আর যাইহোক, ইঙ্গ-মার্কিন জোট ইরাকের তেল ব্যবসায় অন্য প্রতিযোগি প্রবেশ করুক তা চাইবে না। কিন্তু অপর পক্ষ থেকে চাপ চলমান থাকে। জোট থেকে দাবি করা হয় যতক্ষণ না ইরাক থেকে WMD সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ইরাকের উপর এই অর্থনৈতিক অবরোধ বহাল থাকবে। 


কিন্তু ইঙ্গ-মার্কিন জোট এটাই ভাবছিলো যে কতক্ষণ পর্যন্ত আসলে তারা অপরপক্ষের দাবীকে দাবিয়ে রাখতে পারবে। তখন জুনিয়র বুশ ও টনি ব্লেয়ার বুঝতে পারলো যদি তারা ইরাক দখল করে তেলের খনিগুলোর উপর জোটের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে, তখন অন্যান্য প্রতিযোগিদের সাথে দরকষাকষির শক্ত জায়গা তৈরি হবে। কিন্তু জাতিসংঘ তেলের রাজস্বে ডলারের বদলে ইউরো ব্যবহারে জোটের স্বার্থে আঘাত ঘটে, কিন্তু সমগ্র পশ্চিমা ইউরোপ বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ইউরো চালু হওয়ায় খুব লাভবান হয়। 


যাইহোক, নভেম্বর ০৮, ২০০২ সালে ইঙ্গ-মার্কিন জোট- WMD প্রযুক্তি ইরাক তৈরি করছে কীনা তা অনুসন্ধানে ইরাকের সীমান্ত খুলে দিতে বাধ্য করে। এছাড়াও, ইরাকের ক্ষমতা থেকে সাদ্দামকে সরিয়ে ফেলতে নিরাপত্তা পরিষদের অপর তিন সদস্যের সমর্থন আশা করা হয়, বিনিময়ে কম শুল্কে তেল আমদানির নিশ্চয়তা তাদের দেয়া হয়।


মার্চ ২১, ২০০৩ তারিখে ইঙ্গ-মার্কিন জোট ইরাক দখল করে নেয়। পরবর্তী দিনেই জাতিসংঘ ইরাকের উপর থেকে সকল অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়। ফলে অপর পক্ষের কাছে ইরাকের তেলের বাজার উন্মুক্ত হয়ে যায়। বিনিময়ে তারা সরাসরি যুদ্ধের সমর্থন না করে চুপ থাকা নীতি গ্রহণ করে। জোট ইরাকের সমগ্র তেলের খনির উপর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে এখানে দুটি ভাগ তৈরি হয়। যথাঃ

  • বড় বড় খনিগুলো চলে যাবে ইঙ্গ-মার্কিন জোটের নিয়ন্ত্রণে, এবং 

  • ছোট ছোট খনিগুলো অপরপক্ষকে দিয়ে দেয়া হবে। 



এই ছিলো ইঙ্গ-মার্কিন বিশেষ সম্পর্ক কিভাবে ইরাককে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে তার সংক্ষিপ্ত প্রেক্ষাপট। পরবর্তী লেখায় আমরা ইরাক যুদ্ধে ইঙ্গ-মার্কিন জোটের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। ধন্যবাদ। 




ভাবানুবাদঃ বদিরুজ্জামান 

মূল নিবন্ধঃ 


The political economy of Anglo-American War:
The case of Iraq Sandra 
Halperin Department of Politics & International Relations, Royal Holloway, University of London, Egham, Surrey TW20 0EX, UK.







No comments

Theme images by rajareddychadive. Powered by Blogger.