সাধারণত, Anarchy কনসেপ্টটি দিয়ে এমন একটি রাজনৈতিক পরিস্থিকে বুঝিয়ে থাকে, যেখানে আইনের শাসন বাস্তবায়ন করার মত বিদ্যমান কোন কেন্দ্রীয় কাঠামো/ প্রশাসন/ সরকার ব্যবস্থা নেই। আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে, Anarchy কনসেপ্টটি দিয়ে আন্তর্জাতিক সিস্টেম/ ব্যবস্থা পরিচালনায় কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপস্থিতিকে বুঝিয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে স্বভাবতই নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। এই ঝুঁকি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার মৌলিক একক, অর্থাৎ আধুনিক সার্বভৌম রাষ্ট্রকে সামরিকভাবে শক্তিশালী হতে বাধ্য করে। এই শক্তিশালী হওয়ার উচ্চাশা অথবা আবশ্যিকতা রাষ্ট্রকে অস্ত্র প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেয়। এই (অসম) প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী রাষ্ট্র- অন্য রাষ্ট্রের স্বার্থ/টিকে থাকার প্রচেষ্টাকে অবজ্ঞা করে নিজের স্বার্থ অর্জনের পথকে প্রশস্ত করে। বিভিন্ন সংঘাত, যুদ্ধ বা সহিংসতা এই অসম অস্ত্র প্রতিযোগিতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ফল।
যাহোক, এই প্রবন্ধে আমি Anarchy কনসেপ্টটিকে বিস্তারিত আকারে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। প্রবন্ধটি তিনটি অংশে বিভক্ত থাকবে। যথাঃ প্রথমে Anarchy কনসেপ্টটি কী সেই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা থাকবে, দ্বিতীয় অংশে রয়েছে Anarchy কনসেপ্টটির তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, এবং শেষ অংশে থাকবে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে Anarchy কনসেপ্টটি কিভাবে প্রভাবিত করছে তার কতিপয় দৃষ্টান্ত।
উল্লেখ্য, এই প্রবন্ধে আমরা Anarchy কনসেপ্টটিকে নিয়ে প্রচলিত তিনটি প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করবো। যথাঃ
- কিভাবে Anarchy কনসেপ্টটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠল?
- আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে Anarchy কনসেপ্টটি কী চিরন্তর? নাকি পরিবর্তনযোগ্য?
- Anarchy কনসেপ্টটি আধুনিক রাষ্ট্রের পরিচিতি (identity) ও আচরণে (behavior) কেমন প্রভাব ফেলছে?
Anarchy কনসেপ্টটি কী
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে G. Lowes Dickinson যুদ্ধের প্রধান কারণ বিশ্লেষণে সর্বপ্রথম Anarchy ধারনাটির অবতারণা ঘটান। তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চলমান বিবিধ স্বার্থের দ্বন্দ্বকে হ্রাস করার মত শক্তিশালী কোন কেন্দ্রীয় কাঠামোর (High Authority) অভাবকেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে Dickinson পরবর্তী আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিশৃঙ্খল (Anarchic) পরিস্থিতি রোধে কেন্দ্রীয় শাসনই যে একমাত্র নিয়ামক সে যুক্তির সমালোচনা করেন। উপরুন্ত, আন্তর্জাতিক শাসনব্যবস্থা (International Regimes/ Institutions), বিভিন্ন উপায়ে শক্তি ভারসাম্য (Balance of Power), এবং কর্তৃত্ব (Hegemon) প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েও যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা সহমত জ্ঞাপন করেন।
কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা সহ উপরল্লেখিত নিয়ামক তিনটির কোনটিই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা থেকে Anarchy বা বিশৃঙ্খলা হ্রাস ছাড়া মূলোৎপাটনে সক্ষম নয়। এই অক্ষমতার কেন্দ্রে রয়েছে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ধারণা, এবং উপরিউক্ত চারটি নিয়ামকই সার্বভৌমত্বের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ রাষ্ট্র চাইলে উপরিউক্ত চারটি নিয়ামকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারে, অথবা প্রত্যক্ষানও করতে পারে। এই শ্রদ্ধা বা প্রত্যাক্ষান অনেকাংশেই নির্ভর করে রাষ্ট্রের স্বার্থ/নিরাপত্তা/সার্বভৌমত্বের উপর। নিয়ামকগুলো রাষ্ট্রের স্বার্থ/নিরাপত্তা/সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করলে সেখানে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ থাকে, অন্যথায় রাষ্ট্র সেগুলো প্রত্যাক্ষান করে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবেই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় Anarchy কনসেপ্টটি স্থায়ী রূপ লাভ করে।
Anarchy কনসেপ্টটির তাত্ত্বিক বিশ্লেষণঃ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যায়ণের নব্য-বাস্তবাদ তত্ত্ব (Neo-Realism), Anarchy কনসেপ্টটিকে তাদের তাত্ত্বিক রূপরেখার কেন্দ্রে রেখে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিবিধ বিষয়ের বিশ্লেষণের চেষ্টা করে। নব্য-বাস্তববাদ তত্ত্বের প্রখ্যাত তাত্ত্বিক Kenneth W. Waltz'র মতে, আধুনিক রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে আন্তর্জাতিক সিস্টেম, এবং Anarchy বা বিশৃঙ্খলা এই সিস্টেমের মৌলিক উপাদান। তিনি উল্লেখ করেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য শক্তি অর্জনে অভিপ্রায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া, এবং এই প্রচেষ্টাই রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা অর্জনে সহায়তা করে। এভাবে নিরাপত্তা অর্জনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের টিকে থাকা নিশ্চিত হয়, যা আন্তর্জাতিক সিস্টেমের Anarchy বা বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় সামরিক শক্তির বিকল্প হিসেবে সহযোগিতা ও পারস্পারিক সৌজন্যবোধের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বহীন করে তোলে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বেশ কিছু তত্ত্ব (যেমনঃ উদারতাবাদ ও নব্য-উদারতাবাদ), বাস্তববাদ বা নব্য-বাস্তববাদ তত্ত্বের মত আন্তর্জাতিক সিস্টেমকে Anarchy বা বিশৃঙ্খল হিসেবে ধরে নেয়। কিন্তু এই বিশৃঙ্খলায় রাষ্ট্রের আচারণের ধরণ কেমন হওয়া উচিত?, এবং Anarchyর মূলোৎপাটন কি আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে বাস্তবাদ/ নব্য-বাস্তববাদের সাথে নতুন তত্ত্বগুলোর যথেষ্ট মত-পার্থক্য রয়েছে।
উদারতাবাদী (liberalist)ও নব্য-উদারতাবাদীরা (Neoliberalist) রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক সিস্টেমের মৌলিক একক হিসেবে ধরে নেন। এই তত্ত্বমতে, কেবল রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা ও সমন্বিত নিরাপত্তা কার্যক্রমের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক সিস্টেমের Anarchy বা বিশৃঙ্খলা দূর করা সম্ভব। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রগুলোর এই সহযোগিতা বা সমন্বিত নিরাপত্তা প্রচেষ্টা তখন কার্যকর হবে, যখন রাষ্ট্রগুলো সামরিক শক্তি ব্যবহার নীতির পরিবর্তে পারস্পারিক নির্ভরশীলতা (Inderdependence), বিশ্বস্ততা ও যোগাযোগকে বেশি প্রাধান্য দিবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তত্ত্ব হিসেবে `ইংলিশ স্কুল অব থট` Anarchy বা বিশৃঙ্খলাকে আন্তর্জাতিক সিস্টেম ও আন্তর্জাতিক সমাজ উভয়ের কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখিয়ে থাকে। এই তত্ত্বের প্রধান পন্ডিত হেডলি বুল Anarchy বা বিশৃঙ্খলা অনুধাবনে বা বিশ্লেষণে সমাজকে অর্থাৎ মৌলিক এককগুলোর সমন্বয়ে গঠিত কাঠামোকে বেশি প্রাধান্য দিতে বলেন। আন্তর্জাতিকভাবে এই মৌলিক এককগুলো হল রাষ্ট্র, এবং তাদের মেশালে রাষ্ট্রীয় সমাজ বা আন্তর্জাতিক সমাজ তৈরি হয়, যা বৈশিষ্ট্যগতভাবে রাষ্ট্রের অভ্যান্তরীণ সমাজ কাঠামো থেকে অনেকটাই আলাদা, অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সমাজ বিশৃঙ্খলাপূর্ণ হলেও, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমাজ রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের উপস্থিতি লক্ষণীয়, তাই অভ্যন্তরীণ সমাজ নিয়ন্ত্রিত। এই তত্ত্ব মতে, কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অনুপস্থিতি থাকা অর্থ এমন নয় যে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত সাধারণ (Norms) আদর্শগুলো (সার্বভৌমত্ব, শৃংখলা, ন্যায় বিচার ইত্যাদি) হারিয়ে যাবে। ইংলিশ স্কুল অব থট তত্ত্বটি (Norms) আদর্শ ভিত্তিক বিভিন্ন (International Institutions) আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে , আন্তর্জাতিক সিস্টেম বা আন্তর্জাতিক সমাজের Anarchy বা বিশৃঙ্খলা রোধের একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখিয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গঠনবাদ তত্ত্বটি- Anarchy কনসেপ্টটি নিয়ে উপরোন্ত তিনটি তত্ত্বের বধ্যমূল ধারণার সমালোচনা করে। গঠনবাদ তত্ত্বের প্রখ্যাত তাত্ত্বিক আলেক্সান্ডার ওয়েন্ড আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় Anarchy বা বিশৃঙ্খলার ধারণাকে রাষ্ট্রের ইচ্ছের ফসল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। রাষ্ট্রগুলো নিজেদের প্রয়োজনেই Anarchy বা বিশৃঙ্খলা ধারণাটির বিস্তার ঘটায়। রাষ্ট্রগুলোর ব্যবহার ও দরকারের উপর Anarchy বা বিশৃঙ্খলার গতি-প্রকৃতি নির্ভর করে। অর্থাৎ, Anarchy বা বিশৃঙ্খলা ধারণাটি বাস্তবাদীদের নিরাপত্তা/ স্বার্থ আদায়ে সামরিক শক্তি ব্যবহারের বৈধতা দেয়; উদারবাদীদের সমন্বিত নিরাপত্তা ও মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নয়নের পথকে সুগম করে; এবং শৃঙ্খলা, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার প্রভৃতি প্রচলিত আদর্শের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ গঠনের মাধ্যমে (ইংলিশ স্কুলের) আন্তর্জাতিক সমাজে শৃঙ্খলা ফিরে আসে।
Anarchy ধারণাটির (Empirical Problems) প্রায়োগিক জটিলতাঃ
বিশ্বায়ণ (Globalization) ও বিশ্ব শাসণ (Global Governance) ধারণা দুটির জন্য- বাস্তববাদী (Realist) তাত্ত্বিকদের নিকট Anarchy ধারণাটির প্রায়োগিক দিক বিচার-বিশ্লেষণ বেশি জটিল হয়ে দাড়িয়েছে। বর্তমানকার সমস্যা বা নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো (যেমনঃ পরিবেশগত ঝুঁকি, অর্থনৈতিক সমস্যা, অরাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকি প্রভৃতি) প্রকৃতিগতভাবে আন্তঃরাষ্ট্রীয় (Trans-national) বা আন্তঃসীমান্ত (Trans-border)। অর্থাৎ, এই ঝুঁকিতে কোন একক রাষ্ট্রের আক্রান্ত হওয়ার বদলে, সীমান্তবর্তী বা আঞ্চলিক এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ও হুমকির শিকার হতে পারে। যেমনঃ মহামারী করোনা ভাইরাস-১৯। অন্যদিকে, এই ঝুঁকি বা সমস্যা সমাধানকল্পে, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের (International Institutions) সংখ্যাও সমান হারে বেড়েছে। এছাড়াও, রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে বিবিধ অ-রাষ্ট্রীয় সত্তার (Non-state Actors) অংশগ্রহণ দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এমতাবস্থায় Anarchy ধারণাটি কি টিকে থাকবে? যদি না থাকে, অন্য কোনো কাঠামো কী Anarchy ধারণাটিকে প্রতিস্থাপন করবে?
নব্য-উদারবাদীদের (Neo-liberalist) দৃষ্টিতে, বিবিধ আন্তর্জাতিক প্রাতিষ্ঠানই (International Institutions) পারে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার Anarchy বা বিশৃঙ্খলাকে রুখে দিতে। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলো বহুপাক্ষিক কনভেনশন বা চুক্তির সমন্বয়ে গঠিত, যা পারস্পারিক নির্ভরশীলতাকে (Interdependence) তরান্বিত করে। কিন্তু বাস্তববাদীদের (Neo-realist) মতে, পারস্পারিক নির্ভরশীলতা একটি জটিল প্রক্রিয়া, যেখানে অসমতা বিদ্যমান। অর্থাৎ শক্তিশালী ও উন্নত দেশগুলোর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর এই নির্ভরশীলতার কার্যকারিতা নির্ভর করে। যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতে লীগ অব নেশনের ব্যর্থতা, স্থায়ী সদস্যদের উপস্থিতিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিতর্কিত ভেটো ক্ষমতা ইত্যাদি।
অধিকিন্তু, নব্য-বাস্তবাদীরা জটিল পারস্পারিক নির্ভরশীলতাকে- মৈত্রী (Alliance) বা জোট গঠন (Coalition) প্রক্রিয়া থেকে আলাদা করেছেন। যেখানে আন্তর্জাতিক বিশৃঙ্খল ব্যবস্থায় টিকে থাকতে ও রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ে রাষ্ট্র মৈত্রী গঠন করে, পারস্পারিক নির্ভশীলতা সেখানে টিকে থাকার নিমিত্তে শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা বলে, যেমনঃ ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু বাস্তববাদীদের দৃষ্টিতে, বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউরোপীয় ইউনয়নের উত্থান ও বিবর্তনের পিছনে মূল উদ্দেশ্যটি ছিল একক সত্তা হিসেবে নিজেদের নতুন পরিচিতি তৈরি করা। কারণ, যুদ্ধ-পরবর্তী এবং স্নায়ুযুদ্ধকালের Anarchy বা বিশৃঙ্খলাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতে টিকে থাকার ক্ষমতা ইউর দেশগুলোর এককভাবে ছিলো না।
পরিশেষে, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় Anarchy বা বিশৃঙ্খলার উপস্থিতিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ফাউন্ডেশন তত্ত্বগুলো মেনে নিয়েই তাদের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণকে এগিয়ে নিয়েছে বা নিয়ে যাচ্ছে। বেরি বুজান বলেছেন, প্রেক্ষাপট অনুসারে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার গতিবিধি এদিক-সেদিক হলেও, Anarchy বা বিশৃঙ্খলা ধারণাটি এই ব্যবস্থার মূল লজিক হয়ে আছে, এবং থাকবে। বিশ্বায়ণের বহুমূখী প্রভাব বা বিশ্ব শাসনের (Global Governance) নিমিত্তে গঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা প্রশাসণ কোনটিই আন্তর্জাতি ব্যবস্থার এই মৌলিক জায়গার (Anarchy বা বিশৃঙ্খলাপূর্ণ) রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম নয়, অন্তত সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ধারণাগুলো যতদিন টিকে থাকবে ততদিন।
অনুবাদকঃ বদিরুজ্জামান
Key Concepts in International Relations
By: Thomas Diez and David Hudson
No comments