Header Ads

Header ADS

আমরা কেন শুধু প্রয়োজনের খাতিরেই জ্ঞানার্জন করব? জ্ঞানের খাতিরে কেন নয়?



 প্রয়োজনীয়তাই সকল কর্মের মূল। আমরা ব্যবহারিক কর্ম ও লক্ষ্যের দিকে উদ্দেশ্য রেখেই জ্ঞান করি। ন্যায় ও সুনীতির দিকে লক্ষ রেখেই জ্ঞানের পিতা সক্রেটিস তার মতগুলো আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেন, “জ্ঞানই সদগুণ”। এই বাক্যটি দ্বারা সক্রেটিস আমরা জ্ঞান বলতে যা বুঝি তা না বুঝিয়ে বরং তিনি তার মতকে অবিনশ্বর সত্ত্বা হিসেবে বুঝিয়েছেন। সক্রেটিসের মতে, যারা সদগুণের অধিকারী তারাই জ্ঞানী, তারাই প্রজ্ঞাবান। কিন্তু আমার প্রশ্ন যারা এই সদগুণে গুণান্বিত বা প্রজ্ঞাবান তারা কি তাদের জ্ঞানকে কোন অপকর্মে নিযুক্ত করতে পারেন না? উত্তরঃ অবশ্যয়ই পারে (আমার মতে)। 

সক্রেটিস তার নিজের দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে তার নিজের সুচরিত্রের দিকে লক্ষ্য রেখেই উক্তিটি করেছিলেন জ্ঞান বলতে প্রজ্ঞাকে বুঝায়। জ্ঞান দ্বারা আচরণ প্রভাবিত হয়। ধরুন, একজন ব্যক্তি তার প্রয়োজনের খাতিরেই  কিছু একর জমিতে শস্য রোপন করল, কিন্তু দেখা গেল সে আগে থেকেই জানে সামনের বছর খরা বা দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এজন্য সে মৌসুম ছাড়াই শস্য রোপন করে কাঙ্ক্ষিত শস্য মজুদ করতে চায়। কিন্তু অন্য কৃষকরা তাকে পাগল বললো। কিন্তু ঠিকই পরের বছর যখন দুর্ভিক্ষ এল এবং ঐ কৃষক বাদে সবার গোলাই শুণ্য হয়ে গেল, তখন থেকে ঐ ব্যক্তি সত্যিই একজন প্রজ্ঞাবান বলে পরিচিত পেতে থাকলো। 

সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন শুভ কর্ম থেকেই জ্ঞানের উৎপত্তি । মূলত মানুষের কর্মে বা মানুষের আচরণ নিয়ে গ্রীক দার্শনিকগণ এভাবে ভাবতেন না। গ্রীক দার্শনিকরা মূলত জ্ঞানার্জনে ধর্ম দর্শনের উপর বেশি গুরুত্ব দিতেন। সক্রেটিস তার নিজ দেশের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্টায় গুরুত্ব দিতেন। জ্ঞানকে প্রজ্ঞার স্বার্থে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। এজন্যই সক্রেটিস তার শিক্ষার মূলে জ্ঞানতত্ত্বকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন। প্রয়োজনের খাতিরেই হোক বা নিজেকে জানাই হোক তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জ্ঞান। মূলত নিজেকে জানার মধ্যেই দর্শনের বিশেষত্ত্ব। সত্যানুসন্ধান প্রয়োজনীয়তাকে লক্ষ করেই এগোয়। আর জ্ঞানের ভিত্তিই প্রয়োজনীয়তা। 



মুশরেখা নাজনীন রুনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

২০২১-২২ সেশন। 


No comments

Theme images by rajareddychadive. Powered by Blogger.