Header Ads

Header ADS

সুনীল অর্থনীতি (Blue Economy) ও বঙ্গোপসাগর: প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ

Blue Economy বা সুনীল অর্থনীতি ও বঙ্গোপসাগরঃ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ

Blue Economy and Bangladesh

পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। পৃথিবীর শরীরে রক্ত সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করে সমুদ্র। মানব সভ্যতার উন্মেষেও সমুদ্রের অবদান অনস্বীকার্য। জাতিসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত প্রোগ্রামে (United Nations Environment Program- UNEP) সর্বপ্রথম সমুদ্রকে আগামীর টেঁকসই বিশ্ব গড়ার অন্যতম জরুরি অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রাচীন গ্রিসে সমুদ্রকে ‘Cornucopia’ নামে ডাকা হত। শব্দটি দ্বারা এমন এক মহাসত্ত্বাকে বুঝানো হত যে মানুষের তাবৎ আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম। ফলে, মানব সভ্যতা বিকাশে প্রয়োজনীয় নিয়ামকের যোগানদাতা হিসেবে সেই প্রাচীনকাল থেকে সমুদ্রের গুরুত্ব আলোচিত হয়েছে।

তবে, গ্রীক উপকথার ন্যায় সবাই সমুদ্রকে সেভাবে দেখেনি। ইতিহাসের বয়ানে সমুদ্র শুধু বাণিজ্য, যোগাযোগ ও আঞ্চলিক শক্তিপ্রদর্শনের চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানের ছোয়ায় সমুদ্র লুক্কায়িত/ সম্ভাব্য ও দৃশ্যমান প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য রাষ্ট্রের নজরে আসে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা বজায় রাখার দরুন এহেন সম্পদের প্রয়োজনীতা অতীব। ফলে রাষ্ট্রের মাঝে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের প্রতিযোগিতা সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে, UNEP ২০১২ সালে প্রথম Blue Economy বা সুনীল অর্থনীতি ধারণাটির অবতারণা করেন। কনসেপ্টটি ক্রমেই রাষ্ট্রের, বিশেষত বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের নীতি নির্ধারণে জায়গা করে নেয়। তবে, একা কোন রাষ্ট্রের পক্ষে সুনীল অর্থনীতিকে সুফল বা কার্যকর করা সহজ নয়, বস্তুত আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারের দরুন সুনীল অর্থনীতি সমুদ্র তীরবর্তী দেশের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

Blue Economy বা সুনীল অর্থনীতির কথা শুনলেই আমরা একে অর্থনীতির সাথে মিলিয়ে ফেলি। অর্থনীতির বাহিরেও সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত দিককেও Blue Economy সমানভাবে গুরুত্ব দেয় সে দিকটি আমাদের অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয়ে যায়। বস্তুত, সুনীল অর্থনীতি অর্থনীতির সাথে সামাজিক ও পরিবেশগত দিককে এক সুতোয় বাঁধতে চায়।

এই লেখায় সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কনসেপ্টটির সংজ্ঞাসহ, Blue Economy বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশের জন্য, বিশেষত বাংলাদেশের জন্য কতটা জরুরি তা ব্যাক্ষা করা হয়েছে, এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনীল অর্থনীতি ধারণার বাস্তবায়নে বাংলাদেশের ভূমিকা ও চ্যালেঞ্জের বিষয়টিও উল্লেখিত হয়েছে।

Blue Economy আসলে কী?

বেলজিয়ান অর্থনীতিবিদ গুন্টার পাওলি সর্বপ্রথম Blue Economy কনসেপ্টটি বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি তার বিখ্যাত The Blue Economy: 10 Years, 100 Innovations, 100 Million Jobs গ্রন্থে সুনীল অর্থনীতিকে আসন্ন বিশ্বের আশার আলো হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই বইয়ে সুনীল অর্থনীতির সংজ্ঞায় পাওলি বলেন, সুনীল অর্থনীতির প্রাথমিক ও প্রধান উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাযুজ্য বজায় রেখে সামুদ্রিক সম্পদের আহরণ ও সে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করা। অর্থাৎ, একটা পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে সামুদ্রিক সম্পদের আহরণ ও ব্যবহার করা। আরও সহজ করে বললে, সুনীল অর্থনীতি সামুদ্রিক পরিবেশ কম ক্ষতি করে সম্পদ আহরণ ও ব্যবহার করার কথা বলে।
বঙ্গোপসাগরের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ Blue Economy- এর সুফলভোগী হতে চায়। বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রতলে সম্ভাব্য প্রাকৃতিক সম্পদের আধিক্য বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাকে চলমান রাখতে খুবই প্রয়োজন। তবে সে সাথে এই বিশাল সমুদ্র নির্ভর সমাজ ও তাদের জীবিকা, এবং সমুদ্রের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিকেও বাংলাদেশকে ভাবিয়ে তোলে। সম্প্রতি পররাষ্ট্র, পরিকল্পনা, পরিবেশ প্রভৃতি মন্ত্রণালয়ে আলাদা করে সুনীল অর্থনীতি ইউনিট চালু করা হয়েছে। তবে, বঙ্গোপসাগরের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের একার পক্ষে সুনীল অর্থনীতিকে বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না। তাই অভ্যন্তরীন কার্যক্রমের পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

গুন্টার পাওলি ২০১০ সালে Blue Economy- কনসেপ্ট সূচনা করলেও, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, ২০১২ সালে UNEP কর্তৃক আয়োজিত রিও সম্মেলনে (যাকে রিও+২০ বলা হয়) ইউনেপ Blue Economy কনসেপ্টটি সকল রাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপন করে। রিও+২০ সম্মেলনে সমুদ্র নির্ভর বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে সমুদ্রের পরিবেশ প্রেক্ষাপটে পরিচালনার কথা বলা হয়। পাশাপাশি, সে আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুরে ছিলো সমুদ্র নির্ভর সমাজকে সাবলম্বী করে গড়ে তোলা এবং তাদের জীবনমান উন্নয়ন। এই সম্মেলনে সমুদ্র সম্পর্কিত উন্নয়নে সুনীল অর্থনীতিকে সামুদ্রিক সুশাসন ধারণার সাথে সাযুজ্য রাখার জোর দেওয়া হয়।

সামাজিক ও পরিবেশগত দিকের সাথে সাথে সুনীল অর্থনীতি আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি ব্যবহারে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধির কথাও বলে। এর সাহায্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার প্রয়োজনীয় সামুদ্রিক সম্পদ যথাযথভাবে আহরণ সম্ভব। একটা সমন্বয়মূখী দৃষ্টি নিয়ে সুনীল অর্থনীতি যাত্রা শুরু করেছে। তবে, এখন পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ মহলে সুনীল অর্থনীতির প্রকৃত সংজ্ঞায়ন এখনো পাওয়া যায় নি। এছাড়াও, অঞ্চলভেদেও এই ধারণাটির পরিবর্তন ঘটে। তবে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, একাডেমিক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সুনীল অর্থনীতির প্রকৃত সংজ্ঞা নিরুপনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, Blue Economy'র সংজ্ঞায়নে তিনটি বৈশিষ্ট্য অবশ্যয়ই থাকতে হবে। যথাঃ
(ক) সমুদ্র ভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া,
(খ) সমুদ্র তীরবর্তী সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে চেষ্টা করা, এবং
(গ) এমনভাবে উন্নয়ন করা যাতে সামুদ্রিক পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থান বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।

বিখ্যাত ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিনে সুনীল অর্থনীতিকে দুটি বৈশিষ্ট্যের আলোকে ব্যাক্ষা করা হয়েছে। যথাঃ
(ক) সমুদ্র কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও কার্যক্রমকে একটা ভারসাম্য নীতি বজায় রাখতে হবে,
(খ) সে ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক কর্মশালা এমন হবে না যা সামুদ্রিক জটিল বাস্তুসংস্থানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

একইভাবে, আন্তর্জাতিক ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল এসোসিয়েশন (IORA) এর ভাষ্যমতে, সুনীল অর্থনীতি এমন ধরনের সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলে যা মানুষের সামগ্রিক কল্যাণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হবে।

Blue Economy ও বঙ্গোপসাগরঃ সমূহ সম্ভাবনা

বঙ্গোপসাগর পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উপসাগর। তবে, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঐতিহাসিকভাবে বঙ্গোপসাগর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত। প্রায় ১৩০০ মাইল দীর্ঘ ও প্রায় ১০০০ মাইল প্রস্থের বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় ব-দ্বীপ। এই সাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে রয়েছে ভারত, উত্তরে বাংলাদেশ, পূর্বে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড এবং পশ্চিমে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন-ভারত দ্বৈরথ, এবং বৃহত্তর পরিসরে অর্থাৎ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীন- যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার লড়াইয়ের ভূরাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত সমীকরণ বিবেচনায় বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনীতি ও স্ট্রাটেজিক গুরুত্বের বাহিরেও এই উপসাগরের ঐতিহাসিক ভূ-অর্থনৈতিক ও ভূ-পরিবেশগত গুরুত্বও বৈশ্বিক বিবেচনার অংশ হয়ে উঠেছে।

Bay of Bengal Map

বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্বের অন্যতম দিকটি হল এ অঞ্চলের দেশগুলোর অধিকাংশই উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। পাশাপাশি, এ সাগর দক্ষিণ এশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে সংযোগ স্থাপন এবং আসিয়ানভুক্ত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশের সাথে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির এক বড় সুযোগ তৈরি করে।

তবে, সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে সম্ভাব্য প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য। বিশেষত, গ্যাস, তেল ও অন্যান্য বিবিধ মূল্যবান খনিজ সম্পদ। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে চলমান রাখতে এই প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও তার যথাযথ ব্যবহারকে নিশ্চিত করতে হবে। এ সম্পদের যথাযথ উপযোগ বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে, নিজস্ব জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। এছাড়াও, বঙ্গোপসাগরে প্রাপ্ত মৎস, কোরাল, এবং নানা অতি দরকারি ভেষজ উদ্ভিদ টেঁকসই উন্নয়নের অন্যতম সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষত, বঙ্গোপসাগরের মাছের আধিক্য এ অঞ্চলের মানুষের জীবিকা, পুষ্টি ও অর্থসংস্থানে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

Blue Economy নিয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি:

বঙ্গোপসাগরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত সমীকরণ বিবেচনায় সে গুরুত্ব বিশ্ব শক্তির নিকট ক্রমেই বেড়ে চলছে। দুই প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সাথে দীর্ঘদিনের সামুদ্রিক সীমারেখা নির্ণয় নিয়ে সংকটের আইনি সমাধান আসে বাংলাদেশের পক্ষে, যেখানে প্রায় ১,১৮,৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের মত বৃহৎ সমুদ্রসীমা বাংলাদেশের মানচিত্রে যুক্ত হয়। ফলে, সমুদ্র তলের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীবিত ও নির্জীব সামুদ্রিক সম্পদের প্রাচুর্য বাংলাদেশের জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনে।

সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তি রায়ের পর থেকে বাংলাদেশে Blue Economy'র ধারণাটি অধিকমাত্রায় চর্চিত হতে থাকে, বিশেষত সরকারি ও একাডেমিক স্তরে। বস্তত, শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নয়, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও যে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব অপরিসীম সে বিবেচনায় ১৯৭৪ সালে “রাজনৈতিক জলসীমা ও সামুদ্রিক অঞ্চল সংক্রান্ত আইন, ১৯৭৪ (Territorial Waters and Maritime Zones Act, 1974)” গৃহীত হয়। এই অ্যাক্টটি ছিলো সামুদ্রিক বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম আইন।

এই আইনের ফলে, প্রথম, সামুদ্রিক প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজ ও আহরণে গুরুত্ব দেওয়া হয়, এবং এই আহরিত সম্পদ কিভাবে অর্থনীতির কাজে লাগানো যায় সে সম্পর্কেও একটি দিক নির্দেশনা প্রদান করে। এভাবেই, অর্থনীতিকে একটি টেঁকসই রূপ দিতে সুনীল অর্থনীতিকে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যেহেতু একটি বড় অংশের বাংলাদেশি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল, তাই সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ উপযোগের পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়ন ও সমুদ্রের উপর মানুষ্য সৃষ্টি ক্ষত প্রশমনে সুনীল অর্থনীতি ধারণাকে বাংলাদেশ দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

Blue Economy বাস্তবায়নে বাংলাদেশ যে ভূমিকা রাখতে পারে:

বঙ্গোপসাগরকে বাংলাদেশীরা তাদের তৃতীয় প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচনা করে। এ এক সহযোগি প্রতিবেশী, যে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় নিয়ামক দিয়ে সহায়তা করতে পারে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশের নানাবিধ উন্নয়ন নীতি বা এজেন্ডায় বর্তমানে সুনীল অর্থনীতিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে সুনীল অর্থনীতির ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে কাজটি এত সহজ নয়, অনেক জটিলতা রয়েছে।

বাংলাদেশকে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সামুদ্রিক সুশাসন বৃদ্ধিতে একটি কাঠামো তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে, যেখানে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন দেশগুলোও সমভাবে অংশগ্রহণ ও ভূমিকা রাখবে। কারণ সামুদ্রিক বিষয়াবলির ধরণ ট্রান্সন্যাশনাল বা আন্ত:সীমান্ত হওয়ায়, এই সমুদ্র সংক্রান্ত প্রচেষ্টাগুলোও আসতে হবে প্রতিটি দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায় থেকে। একা কোন দেশের পক্ষে, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার মত উন্নয়নশীল দেশের প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব বিবেচনায়, সামুদ্রিক সম্পদ আবিষ্কার ও আহরণ সম্ভব হয়ে ওঠে না।

এই বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ ও যথাযথ ব্যবহার সংক্রান্ত কিছু নীতিমালা এবং স্ট্রাটেজির খসড়া তৈরি করেছে। বিবেচ্য খসড়াকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাষ্ট্রসহ সমুদ্র সংক্রান্ত অন্যান্য অংশীদার ও বিশেষজ্ঞদের সাথে সমন্বিত হয়ে একটি কার্যকরী কাঠামোয় রূপান্তরে সচেষ্ট আছে। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশের তরফ থেকে সামুদ্রিক সুনীল অর্থনীতির সাহায্যে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সমুদ্র গবেষণা, নজরদারি জোরদার ও দরকারি তথ্যের পারস্পরিক আদান-প্রদানকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।

এছাড়াও, সুনীল অর্থনীতির যথার্থ উপযোগ লাভে, বাংলাদেশের পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মান প্রদর্শন, পারস্পরিক মুনাফা অর্জন এবং সে মুনাফার সমবন্টন ইত্যাদি বৈশ্বিক নীতি আদর্শের ভিত্তিতে আন্ত:রাষ্ট্রীয় সমন্বয় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারের গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে, বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনাকে কাজে কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে আরও সক্রিয়ভাবে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কাজ করে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থায় বাংলাদেশ এই ইস্যুটিকে নিয়ে তার প্রচেষ্টা চালাতে পারে। যদিও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। বিশেষত, সার্ক, বিমসটেকের মত আঞ্চলিক সংস্থাকে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে। এছাড়াও, কাছের সফল আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের সাথেও সুনীল অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করতে পারে।
সাগরের জলসীমায় সকলের অধিকার রয়েছে তাই একে “গ্লোবাল কমনস বা বৈশ্বিক সম্পদ বলা হয়।” এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ Bay of Bengal Partnership for Blue Economy ভিশনকে হাতে নিয়েছে। এই ভিশনের লক্ষ্য উপকূলীয় দেশগুলোয় টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এছাড়াও, বাংলাদেশ তার সামুদ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন:
  • বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ,
  • সামুদ্রিক জ্ঞান বিকাশে একটি সামুদ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় (BSMRMU) প্রতিষ্ঠা,
  • সামুদ্রিক গবেষণা ত্বরান্বিত করতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরি,
  • বিভিন্ন সামুদ্রিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা আয়োজন করা ইত্যাদি।
বঙ্গোপসাগরকে বাংলাদেশীরা তাদের তৃতীয় প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করেন। এ এক সহযোগি প্রতিবেশী যে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় নিয়ামক দিয়ে সহায়তা করতে পারে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশের নানাবিধ উন্নয়ন নীতি বা এজেন্ডায় বর্তমানে সুনীল অর্থনীতিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে সুনীল অর্থনীতির ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে কাজটি এত সহজ নয়, অনেক জটিলতা রয়েছে।

বাংলাদেশকে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সামুদ্রিক সুশাসন বৃদ্ধিতে একটি কাঠামো তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে, যেখানে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন দেশগুলোও সমভাবে অংশগ্রহণ ও ভূমিকা রাখবে। কারণ সামুদ্রিক বিষয়াবলির ধরণ ট্রান্সন্যাশনাল বা আন্ত:সীমান্ত হওয়ায়, এই সমুদ্র সংক্রান্ত প্রচেষ্টাগুলোও আসতে হবে প্রতিটি দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায় থেকে। একা কোন দেশের পক্ষে, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার মত উন্নয়নশীল দেশের প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব বিবেচনায়, সামুদ্রিক সম্পদ আবিষ্কার ও আহরণ সম্ভব হয়ে ওঠে না।
সে বিবেচনাকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ ও যথাযথ ব্যবহার সংক্রান্ত কিছু নীতিমালা এবং স্ট্রাটেজির খসড়া তৈরি করেছে। বিবেচ্য খসড়াকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাষ্ট্রসহ সমুদ্র সংক্রান্ত অন্যান্য অংশীদার ও বিশেষজ্ঞদের সাথে সমন্বিত হয়ে একটি কার্যকরী কাঠামোয় রূপান্তরে সচেষ্ট আছে। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশের তরফ থেকে সামুদ্রিক সুনীল অর্থনীতির সাহায্যে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সমুদ্র গবেষণা, নজরদারি জোরদার ও দরকারি তথ্যের পারস্পরিক আদান-প্রদানকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।

এছাড়াও, সুনীল অর্থনীতির যথার্থ উপযোগ বিকাশে, বাংলাদেশের পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মান প্রদর্শন, পারস্পরিক মুনাফা অর্জন এবং সে মুনাফার সমবন্টন ইত্যাদি বৈশ্বিক নীতি আদর্শের ভিত্তিতে আন্ত:রাষ্ট্রীয় সমন্বয় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারের গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে, বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনাকে কাজে কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে আরও সক্রিয়ভাবে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কাজ করে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থায় বাংলাদেশ এই ইস্যুটিকে নিয়ে তার প্রচেষ্টা চালাতে পারে। যদিও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। বিশেষত, সার্ক, বিমসটেকের মত আঞ্চলিক সংস্থাকে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে। এছাড়াও, কাছের সফল আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের সাথেও সুনীল অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করতে পারে।

সাগরের জলসীমায় সকলের অধিকার রয়েছে তাই একে “গ্লোবাল কমনস বা বৈশ্বিক সম্পদ বলা হয়।” এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ Bay of Bengal Partnership for Blue Economy ভিশনকে হাতে নিয়েছে। এই ভিশনের লক্ষ্য উপকূলীয় দেশগুলোয় টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এছাড়াও, বাংলাদেশ তার সামুদ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন: বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ, সামুদ্রিক জ্ঞান বিকাশে একটি সামুদ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় (BSMRMU) প্রতিষ্ঠা, সামুদ্রিক গবেষণা ত্বরান্বিত করতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরি, বিভিন্ন সামুদ্রিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা আয়োজন করা ইত্যাদি।

Blue Economy বাস্তবায়নে বাংলাদেশ যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়:

উপকূলীয় ব্যবস্থাপনা ও সামুদ্রিক সুশাসন (Coastal Management & Ocean Governance) সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়নের অন্যতম শর্ত। সমুদ্র সংক্রান্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিকে উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা ও সামুদ্রিক সুশাসন নিশ্চিত করার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, বাংলাদেশের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে এ সম্পর্কিত নীতি প্রণয়নে কম গুরুত্ব দিতে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশকে বিস্তারিত আকারে একটি সমুদ্র সংক্রান্ত নীতি প্রণয়নের কথা বলে আসছে, বিশেষত সমুদ্রের সম্পদ আহরণ ও উপযোগ সংক্রান্ত সামুদ্রিক নীতি।

সুনীল অর্থনীতির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হল সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, সমুদ্র দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা ইস্যুর ভিতরে একটি সমন্বয় তৈরি করা। তবে বিভিন্ন লেখনিতে সুনীল অর্থনীতি প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য কতগুলো চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়েছে। যথা:

ক।     সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে মানুষ ও সামুদ্রিক পরিবেশের উপর প্রভাব নির্ধারণ: অর্থাৎ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা খুবই জরুরি এবং সেক্ষেত্রে সামুদ্রিক সম্পদের প্রাচুর্য বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু সে সম্পদ আহরণ ও তার ব্যবহার সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল মানুষ ও প্রকৃতির জন্য যেন নেতিবাচক প্রভাব বয়ে না আনে সেদিকে বাংলাদেশকে নজর রাখতে হবে।

খ।     উপকূলীয় দেশের মাঝে জ্ঞান, সক্ষমতা ও দক্ষতার ক্ষেত্রে পার্থক্য: এক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সমুদ্র সংক্রান্ত জ্ঞান ও দক্ষতার একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ বাংলাদেশকে করতে হবে। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের সামুদ্রিক সম্পদের খোঁজ ও আহরণের যে জ্ঞান ও দক্ষতা রয়েছে বাংলাদেশের কী সে পরিমাণ রয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশকে খুঁজতে হবে, এবং জ্ঞান ও দক্ষতা যদি কম থাকে তখন বাংলাদেশকে সে ঘাটতি নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে অন্যান্য উপকূলীয় দেশের সাথে সমন্বিতভাবে বাংলাদেশ তার সামুদ্রিক জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে চেষ্টা করতে পারে।

গ। সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত সম্পদ ও মুনাফার সমতাসূচক (equity) বন্টন: আগেই উল্লেখ করেছি, সমুদ্রকে গ্লোবাল কমন্স বা বৈশ্বিক সম্পদ বলা হয়। তাই বঙ্গোপসাগর থেকে প্রাপ্ত সম্পদ থেকে যে মুনাফা আসবে তা এই উপকূলীয় দেশের সকলের মাঝে সমহারে বন্টন করতে হবে। তবে এখানে সমহার নির্ধারিত হবে সমন্বিতভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে কোন রাষ্ট্র কতটুকু সহযোগিতা করেছে তার উপর। সাহায্যের আনুপাতিকহারে মুনাফাকে সমবন্টন করতে হবে। এ বিষয়টি উপকূলীয় দেশের মাঝে সুনীল অর্থনীতির ধারণাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

ঘ।     সামুদ্রিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব: উপকূলীয় দেশের মাঝে সামুদ্রিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতায় পার্থক্য দেখা যায়। যেমন: বঙ্গোপসাগরের প্রেক্ষাপটে ভারত ও থাইল্যান্ড সামুদ্রিক প্রযুক্তিতে অনেক অগ্রগামী। তাই এই দুই রাষ্ট্রের নিজেদের সীমানা এবং সীমানার বাহিরেও সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের সুযোগ বেশি তৈরি হয়। এই পার্থক্য হ্রাসে সকলের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে, তবে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। পারস্পারিক সম্মান ও লাভের বিষয়টিকে সামনে রেখে ভারত ও থাইল্যান্ডের সাথে একযোগে বাংলাদেশকে কাজ করে যেতে হবে, এবং পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঙ।     সমুদ্র সংক্রান্ত বিভিন্ন অংশীদারদের মাঝে সুশাসন নিশ্চিত করা: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে নিয়োজিত বিভিন্ন অংশীদারদের ভিতরে সমন্বয় নিশ্চিত করতে সামুদ্রিক সুশাসনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বা অন্য বিভিন্নকারণে এই অঞ্চলের দেশগুলো স্বেচ্ছাধীনভাবে তাদের সামুদ্রিক সম্পদের আহরণ ও ব্যবহার করতে পারে। যা সামগ্রিকভাবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির আদলে সামুদ্রিক সুশাসনের বিষয়টিকে এ অঞ্চলের সকলের মাঝে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা চালাবে, যাতে, সকল রাষ্ট্র ও সমুদ্র কেন্দ্রিক অংশীদারদের মাঝে একটি সমঝোতার পরিবেশ তৈরি হয়, এবং এ অঞ্চলে সুনীল অর্থনীতি ধারণাটি অধিকমাত্রায় গুরুত্ব পায়।

বস্তুত, উপরিউক্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ আবশ্যিকভাবে একটি সমন্বিত সামুদ্রিক নীতি (A comprehensive Maritime Policy) প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সামুদ্রিক দূষণ, সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ, সামুদ্রিক গবেষণা ও প্রযুক্তি আদান-প্রদান ইত্যাদি বিষয় প্রাধান্য পাবে। এবং এই নীতি যেন সমুদ্র সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিকে অনুসরণ করে তৈরি হয় সেদিকেও বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকদের মাথায় রাখতে হবে। যদি এ পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা হয়, তবে বাংলাদেশের জন্য সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়নের পথ সহজ ও সুগম হবে।



রেফারেন্সঃ
১. Pauli, G. (2010). The Blue Economy: 10 Years, 100 Innovations, 100 Million Jobs. Paradigm Publications.

২. World Bank. 2017. What is the Blue Economy? https://www.worldbank.org/en/news/infographic/2017/06/06/blue-economy

৩. UNFCCC. 2021. Everything You Wanted to Know About the Blue Economy. https://unfccc.int/news/everything-you-wanted-to-know-about-the-blue-economy-but-were-afraid-to-ask gad_source=1&gclid=Cj0KCQjw3bm3BhDJARIsAKnHoVXyrjzZY0zE4KL52DvvnnazCqe8Fa-YJGS7NNROIXDk6oD1zePgqIsaAtUTEALw_wcB 

৪। Rahman, M.R. (2017). Blue Economy and Maritime Cooperation in the Bay of Bengal: Role of Bangladesh. ScienceDirect. 



লেখকঃ
বদিরুজ্জামান 
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 





No comments

Theme images by rajareddychadive. Powered by Blogger.