যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে ইসরায়েল লবি'র প্রভাব
পবিত্র নগরী ‘জেরুজালেম’ কে ঘিরে বৈশ্বিক ইতিহাস নানা ধাচে, নানা ধাপে ও নানা রূপে আবর্তিত হয়েছে। এই ইতিহাসের কিয়দাংশ নিষ্ঠুর, কিছু অংশ শান্তির, এবং বাকী অংশ সঙ্কটের। 
ইহুদিদের হাজার বছরের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও বিচ্ছিন্নতার করুণ ইতিহাস, ও পবিত্র ভূমিতে ফিরে যাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষার সাথে রাজনৈতিক অনুষঙ্গ যুক্ত হয়, তখন থেকে জেরুজালেমকে ঘিরে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় বিশ্বব্যাপী ইহুদি অভিবাসীরা তৎপরতা শুরু করে। 
বিংশ শতকের শুরুর দিকে (১৯১৭ সালে), আর্থার বেলফোর “বেলফোর ঘোষণা”র মধ্য দিয়ে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জনক থিওডর হার্জেলের “ইহুদি রাষ্ট্র” কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেন। 
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ভার্সাই চুক্তিতে বেলফোর ঘোষণার সংযোজন, ফ্যাসিবাদের উত্থানে ইহুদি নিধনের রূপরেখা ও ইতিহাস জঘন্য গণহত্যা প্রভৃতি বিবেচনা সাপেক্ষে পশ্চিমা শক্তি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি প্রদান করে। 
কিন্তু একজনের প্রয়োজনীতা যখন অন্যের নিরাপত্তা, অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ হয়, তখন সেই প্রয়োজনীয়তাকে মেনে নেয়া বা তা আদায়ে শক্তি ব্যবহারকে বৈধতা দেয়াকে কখনই আইনসিদ্ধ কাজ বলা চলেনা। আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টি এ ধরণের অনুপ্রবেশ ও দখলদারিত্ব বে-আইনি। 
বস্তুত, ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, অস্তিত্ব ও সার্বভৌমের প্রতি হুমকিস্বরূপ, প্রথম থেকেই পশ্চিমা শক্তি সে ব্যপারে উদাসীন বা নিশ্চুপ বা ইসরায়েলপন্থী।  
আসলে একটা রাষ্ট্রের সীমানার বাহিরে ঘটে যাওয়া বা চলমান বিষয়কে রাষ্ট্রটি যে আয়নায় দেখে তাকে বৈদেশিক নীতি বলে। এই বৈদেশিক নীতির বিচারেই পশ্চিমা বিশ্ব- ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে প্রয়োজনীয় ও যৌক্তিক হিসেবে বিবেচনা করলেও, ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইসরায়েলের অবৈধ অনুপ্রবেশ, দখলদারিত্ব, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রভৃতিকে এড়িয়ে যায় বা ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করে। 
কিন্তু অন্যান্য দেশের অবৈধ দখলদারিত্ব, গণহত্যা বা মানবাধিকারকে পশ্চিমা বিশ্ব কঠোর সমালোচনা ও শান্তির প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করলেও, কেন ইসরায়েলের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্ব তেমন সোচ্চার নয় তা নিয়ে বিস্তর আলোচনার সুযোগ রয়েছে। 
তবে, এই বিপরীতমূখীতার অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে: নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। বস্তুত, নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন মানুষ-ই করে, সে হোক ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক; এবং মানব আচরণকে বিভিন্ন প্রেক্ষিতে বা কাঠামোয় প্রভাবিত করা যায়। পশ্চিমা বিশ্বের ইসরায়েল নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়জ এই প্রবণতা লক্ষণীয়। 
অর্থাৎ, ইসরায়েলের সমর্থনে যে লবি গ্রুপ কাজ করে, তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে পশ্চিমা শক্তির মধ্যপ্রাচ্য নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে একধরনের ইসরায়েলি সমমনা নীতি পরিলক্ষিত হয়। সাম্প্রতিক ইসরায়েলের গণহত্যার বিপরীতে পশ্চিমা বিশ্বের ইসরায়েলের পক্ষ গ্রহণ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ছাড়া কিছুই নয়। 
এই লেখায় আমরা ইসরায়েল লবির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবো, এবং দেখানোর চেষ্টা করবো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যীয় নীতি কিভাবে ইসরায়েল লবির প্রভাবে প্রভাবিত হয়। 
ইসরায়েল লবি কী?  
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনী (অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক) পরিক্রমায় ‘লবি (Lobby)’ একটি অতি পরিচিত শব্দ। অস্ত্র, খনিজ সম্পদ, নারীবাদী, পরিবেশবাদী, আরব-অভিবাসী প্রভৃতি লবির মত ইসরায়েল লবিও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নীতিকে প্রভাবিত করে, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত বৈদেশিক নীতিকে। 
মার্কিন কংগ্রেসের ভাষ্যমতে, ইসরায়েল লবি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় পলিসিকে অন্য যেকোন লবির তুলনায় অধিক ও কার্যকারিভাবে প্রভাবিত করতে পারে। 
ইসরায়েল লবি একটি বিমূর্ত ধারণা- অনেকটা জনপ্রিয় একশন থ্রিলার ‘জন উইক’ সিনেমার ‘High Table’- এর মত, যাকে ঘিরে থাকে নানান গ্রুপ ও দল, যারা হাইটেবিল-এর নির্দেশিত লক্ষ্যে কাজ করে যায়। হাইটেবিল- এর উপর কেউ-ই না। 
তেমনি যুক্তরাষ্ট্রে, ইসরায়েল লবিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যারা লবির মূল উদ্দেশ্যের (ইসরায়েলকে যেন যুক্তরাষ্ট্র নিরিবিচ্ছিন্নভাবে কূটনৈতিক, আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে যায়) প্রতি অনুগত থাকবে। তাদের ভিতর ব্যক্তিগত যতই ভিন্নতা থাকুক, ইসরায়েল প্রসঙ্গে সকলেই একযোগে কাজ করবে। 
ইসরায়েল লবি’র প্রকারভেদঃ 
অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন লবি’র হয়ে কাজ করে থাকে। তাদের কাজের ধরণ ভেদে লবি’কে চারভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ 
১। যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করে এমন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য লবি'র একদম কেন্দ্রীয় কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন: AIPAC (Americans-Israel Public Affairs Committee) কাজ করে যায়। 
২। প্রাদেশিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কংগ্রেসের সিনেটরদের নির্বাচনের ইশতেহারে যেন ইসরায়েল পন্থী যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে সমর্থন জানানো হয় সে জন্যও লবি'র কিছু কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান যেমন: ADL (Anti-Defamation League) কাজ করে যায়। 
৩। যেসব খ্রিস্টান জায়নবাদী দলগুলো যেমন: CUFI (Christian United For Israel) ইসরায়েলকে সমর্থন জানায়, লবি'তে তাদের আমন্ত্রণ জানানো, এবং তাদের সমন্বয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলকে চাপ প্রদান করা। এবং
৪। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সামনে একধরনের ইসরায়েলপন্থি ন্যারেটিভ বা কাহিনি তৈরি করতে বিভিন্ন গবেষণা ফার্ম যেমন: Washington Institute for Near East Policy, গণমাধ্যম যেমন: Fox News, The New Republic, বিভিন্ন স্কলার ও জনপ্রিয় মুখকে ব্যবহার করা। 
কিভাবে ইসরায়েল লবি কাজ করে? 
ইসরায়েল লবি যুক্তরাষ্ট্রে দুইভাবে কাজ করে যায়। যথা: 
১। AIPAC, ADL এর মতন লবি’র কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ভিতরের প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের সাথে যোগসূত্র বজায় রাখে। যে সব কর্মকর্তাবৃন্দ ইসরায়েল ইস্যুর প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করে, লবি'র প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় রাজনীতিবিদদের সাথে লবিং করে ঐ কর্মকর্তাদের উঁচু পদে পদন্নিত করার সুপারিশ করে যায়। 
আবার, ইসরায়েল লবি ইসরায়েল ইস্যুকে নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদেরকে নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমনঃ ইসরায়েলপন্থী নির্বাচন প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালানো, তার পক্ষে মিডিয়াকে ব্যবহার, তার নির্বাচনী খরচের বড় অংশ প্রদান, এবং বিরোধী প্রার্থী যদি ইসরায়েল ইস্যুকে গ্রহণ না করে তবে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ইত্যাদি।  
২। বিভিন্ন গণমাধ্যম, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সাহায্যে ইসরায়েলপন্থী বিভিন্ন কাহিনী বা বর্ণনা (Narrative) তৈরির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সামনে ফিলিস্তিনিদের সন্ত্রাস ও জঙ্গি হিসেবে চিত্রায়িত করে, এবং ইসরায়েলের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে। 
পাশাপাশি, যদি কোন গণমাধ্যম, প্রকাশনী, বা ব্যক্তি ইসরায়েলের সমালোচনা করে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতি থেকে ইসরায়েলকে প্রদত্ত নিরিবিচ্ছিন্ন সুবিধাকে নিয়ে প্রশ্ন করে, লবি তাদেরকে Anti-Semite বলে ট্যাগ দেয়, এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে তা প্রচার করা হয়। এমনকি লবি, তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট, তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও আইনি জটিলতায় অপদস্থ করতে চায়। 
বিরোধী মতকে লবি কেন “Anti-Semite” বলে?
আমেরিকা ও ইউরোপে, উনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে, আরব ও ইহুদি ভাষা ও সংস্কৃতিকে বুঝাতে সেমিটিক শব্দটিকে প্রথম ব্যবহৃত হয়। উনবিংশ শতকে, আমেরিকায় সেমেটিক বিরোধী চেতনা বাড়তে থাকে, এবং আরব ও ইহুদিদেরকে একধরনের সামাজিকভাবে একঘরে করে রাখা হয়। 
পরবর্তীতে, ফ্যাসিবাদের উত্থান সেমিটিক সংস্কৃতির উপর গজব হিসেবে আবির্ভূত হয়। দুই বিশ্বযুদ্ধ মধ্যবর্তীকালে সেমিটিক বিরোধী অভিজানের ফলে ঘটে যায় ইতিহাস ধীকৃত ইহুদি গণহত্যা। 
ফলে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে যখন আন্তর্জাতিক আইনের বিকাশ হতে শুরু করে, তখন থেকে ইউরোপ ও আমেরিকায়, সেমেটিক বিদ্বেষী আচারণ বা মনোভাবকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে খুবই নেতিবাচক হিসেবে দেখতে শুরু করে। 
মজার ব্যপার হল, ইসরায়েল যখন অন্যায়ভাবে ফিলিস্তিন ভূখন্ডকে দখল করে, তখন থেকে ইসরায়েল সেমেটিজম বিরোধী আচারণের ফলে পশ্চিমা বিশ্বে সৃষ্ট হওয়া সমালোচনাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা শুরু করে। অর্থাৎ, ইসরায়েল ইহুদি ভাষা ও ধর্মকেই শুধু সেমেটিক সাংস্কৃতির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়, এবং এক্ষেত্রে ইসরায়েল লবির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। 
যাহোক, তিনটি কারণে, ইসরায়েল লবি, ইসরায়েলের সমালোচনাকারীদের (প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি) Anti-Semite হিসেবে জাহির করে। যথাঃ 
১. ইসরায়েল সম্পর্কিত আমেরিকান পলিসি, অর্থাৎ, নিরিবিচ্ছিন্নভাবে ইসরায়েলকে কূটনৈতিক, সামরিক ও আর্থিক সাহায্য যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে যাবে, এই নীতিকে সমালোচনা বা প্রশ্ন করা থেকে বিরত রাখা (বিষয়টিকে লোক চক্ষুর অন্তরালে রাখা);
২. ইসরায়েল কিংবা ইসরায়েল পন্থী লবি’র বিরুদ্ধে যেন কোন সমালোচনা তৈরি না হয় তার জন্য এক ধরণের পরোক্ষ হুমকি প্রদান করা; এবং 
৩. যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষিতে সমালোচনাকারীদের, বিশেষত শিক্ষাবিদ ও রাজনীবিদদের কোণঠাসা করে রাখা। 
আমেরিকা কেন লবি'কে সহায়তা করে? 
যুক্তরাষ্ট্রের বাৎসরিক যে সামরিক ও আর্থিক অনুদান তার মিত্রদের দিয়ে থাকে, ইসরায়েল সেই অনুদানের সর্ববৃহৎ গ্রহীতা। কিন্তু যে মানদণ্ডের বিচারে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অনুদান দিয়ে থাকে, সামরিক ও আর্থিক বিনেচনায় অনেক আগেই সে মানদণ্ড অতিক্রম করেছে ইসরায়েল। 
বর্তমানে মাথাপিছু আয় ও সামরিক শক্তি বিবেচনায় ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিরিবিচ্ছিন্ন কূটনৈতিক সহায়তা পায় ইসরায়েল। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের খুব সংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা বা প্রেসিডেন্ট বা কংগ্রেসম্যান আছেন, যারা এই বিশাল পরিমাণের অনুদান ও কূটনৈতিক সমর্থনকে ক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলেন।  
এর কারণ কী? আসলে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কে-ই বা শেষ করতে চাইবে ইসরায়েল লবি'র বিরুদ্ধে গিয়ে! তবে এই সমর্থনের কারণ জনগণকে জানাতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রথম থেকেই কয়েকটি কারণ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহল জনগণকে বলে আসছে। যেমন:
১. ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পরীক্ষিত ও শক্তিশালী মিত্র। ইসরায়েল স্নায়ুযুদ্ধকালে মধ্যপ্রাচ্যে সোভিয়েত অনুপ্রবেশ রুখে দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করেছে। পরবর্তীতে, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা সহ মধ্যপ্রাচ্যের তেলের যোগান নিরিবিচ্ছিন্ন ও নিরাপদ রাখতেও ইসরায়েল কাজ করে যাচ্ছে। 
২. মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ সেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর নেই, আর গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক চর্চাই আমেরিকার প্রধান মূল্যবোধ। সেক্ষেত্রে ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশ। ইসরায়েলের গণতন্ত্র চর্চা বজায় রাখতে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা দরকার। 
৩. হাজার বছর ধরে ইহুদিরা অভিবাসী জীবনযাপন করছেন। অভিবাসী হিসেবে অনেক নির্যাতন, নিপীড়ন ও মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের শিকার  তারা হয়েছেন। দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যভাগে ফ্যাসিজমের বিকাশে তাদের ইতিহাসের জঘন্য গণহত্যার স্বীকার হতে হয়েছে। ফলে নৈতিকভাবে পশ্চিমা শক্তিগুলো ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও এর নিরাপত্তা বজায় রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। 
আমেরিকার ইহুদি নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া: 
ঐতিহাসিক মেলভিন ও রোসেনথালের ভাষায়, “নৃগোষ্ঠি হিসেবে, আমেরিকার ইতিহাসে, আমেরিকান ইহুদি নাগরিকরাই আমেরিকার বাহিরে অন্য কোন রাষ্ট্রের (ইসরায়েল) ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি তৎপর।” এই আমেরিকান ইহুদিদের একটা বড় অংশ লবি'র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে ইসরায়েলের পক্ষে কাজ করেন। 
যেমন: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রো-ইসরায়েলি প্রার্থীদের পক্ষে ক্যাম্পেইন, বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে চিঠি প্রদান, এবং আর্থিকভাবে সাহায্যও করে। যাতে প্রার্থী পরবর্তীতে ইসরায়েল সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ইসরায়েলকে সাপোর্ট দিতে পারে। 
তবে, ইসরায়েল লবি’কে সম্পূর্ণরূপে “ইহুদি লবি” বলে চিত্রায়িতও করা সঠিক নয়। কারণ ইসরায়েলকে নিয়ে আমেরিকান ইহুদিদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষিত হয়। যেমনঃ 
- ২০০৪ সালের এক গবেষণায় উঠে আসে আমেরিকার প্রায় ৩৬ শতাংশ ইহুদি নাগরিক, ইসরায়েলকে নিয়ে কোনভাবেই চিন্তিত নয়; এমনকি ইসরায়েলের প্রতি কোন টানও অনুভব করেন না।
 - আবার, অনেক আমেরিকান ইহুদি আছেন যারা ইসরায়েলকে নিয়ে ভাবেন বা টান অনুভব করেন, তবে,তবে, লবি’র বড় বড় প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলকে সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি পরিবর্তনের চাপ দেয়ার ব্যপারে একাত্মতা প্রকাশ করেন না। যেমনঃএই শ্রেণি ইরাক ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি ব্যবহারের তীব্র বিরোধিতা করে।
 - কিছু গ্রুপ বা ব্যক্তি যারা ইহুদি নয়, ইভাঞ্জেলিকাল খ্রিষ্টান বা খ্রিষ্টান জায়নবাদী তারা ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরিবিচ্ছিন্ন সমর্থন ও সাহায্যের ক্ষেত্রে অন্যতম জোড়াল গ্রুপ।
 
ইসরায়েল লবি, আমেরিকার ইহুদি সমাজে ইহুদি ধর্মকে ব্যবহার করে ইহুদি জাতীয়তাবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়, ইসরায়েল রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য করতে আর্থিক ও আমেরিকান ইহুদিদের সমর্থন আশা করে। তবে, আমেরিকান সমাজে ধর্মকে এতো জোরেশোরে প্রচারের অন্যতম একটি কারণ সেক্যুলারিজমকে মোকাবিলা করা। 
অর্থাৎ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে, অনেক ইহুদি আমেরিকায় অভিবাসন করে। ক্রমান্বয়ে, এই আভিবাসীদের পরবর্তী প্রজন্মগুলো আমেরিকান সেক্যুলার সংস্কৃতির অনুসারী হয়ে ওঠে। এই প্রবণতাকে ইসরায়েল ও আমেরিকার কট্টর ডানপন্থী ইহুদি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।  
তবে, ইসরায়েল লবি’র সকল প্রতিষ্ঠানই যে একইভাবে, একই উদ্দেশ্য, একযোগে কাজ করে যায়, তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধীতা আবার প্রতিযোগিতারও দেখা যায়। যেমনঃ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ নিয়েও লবি’র প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। 
যেমনঃ AIPAC ও Conference of Presidents- এর মত লবি’গুলো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সঙ্কটের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় হার্ডলাইন নীতি অনুসরণ করে। অন্যদিকে, Ameinu, American for Peace Now, Jewish Alliance, Israel Policy Forum প্রমুখ প্রতিষ্ঠানগুলো শান্তিচুক্তির পক্ষে, এবং দুই রাষ্ট্র নীতিকেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সঙ্কটের সমাধান হিসেবে দেখেন।  মাঝে মাঝে এই বিরোধ অনেক তীব্র হয়ে যায় যা লবি’র প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সম্পর্কের চির ধরায়। 
তবে মত-পার্থক্য যতই থাকুক, উভয় দলই প্রচেষ্টা অব্যহত রাখে যাতে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল বিশেষ সম্পর্ক যেন অটুট থাকে। তবে কিছু লবি গ্রুপ যেমনঃ Jewish Voice for Peace (JVP) আমেরিকাজুড়ে ক্যাম্পেইন চালায় যতে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা ততদিন বন্ধ রাখে, যতদিন না ইসরায়েল পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে তাদের অবৈধ দখলদারিত্ব প্রত্যাহার করে। 
মজার বিষয় হলো, যখন ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ে ব্যবহারে প্রয়োজন হয়, তখন নতুন কোন ধর্মীয় অনুশাসনের অবতারণা ঘটে প্রায়শই। ইহুদি ধর্মকে পুঁজি করে যে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেখানেও একই ধারা লক্ষণীয়। 
যেমনঃ ইহুদি ধর্মে নিজের সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কারো সাথে বিবাহ নিষেধ করা হলেও আমেরিকার ইহুদি সমাজে একটা কথা প্রচলিত হয়ে উঠেছে যে ইহুদিদের জন্য নিজ ধর্মের বাহিরে কাউকে বিবাহ করার চেয়ে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের সমালোচনা আরও জঘন্য পাপ। 
তবে ইসরায়েলকে দেয়া নিরিবিচ্ছিন্ন সমর্থন সমালোচনায় কিছু প্রোগ্রেসিভ ইহুদি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। তারা নানাভাবে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরোধিতা করে থাকে। ফলে, এদের অনেকেরই কট্টর ইসরায়েলপন্থিদের রোষানলে পড়তে হয়। তাদেরকে আমেরিকান সমাজে বিভিন্নভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা লবি করে। 
যেমনঃ Jews for Fatah, Cheerleaders for Defeatism, Frontier for the PLO প্রভৃতি তকমায় ভূষিত করা হয়। এছাড়াও লবি’র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুমকির সম্মুখীন তাদের হতে হয়। 
ইসরায়েল লবি’র শক্তির উৎসঃ 
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নীতিকে বিভিন্ন লবি প্রভাবিত করে- এটা যুক্তরাষ্ট্রের খুব সহজ ও পরিচিত একটি পদ্ধতি। তবে, ইসরায়েল লবি’র শক্তি, কর্মদক্ষতা ও কর্ম-পরিধি যুক্তরাষ্ট্রের বাকি যেকোনো লবি’কে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু লবি’র এই বৃহৎ শক্তির উৎস কী? জন মেয়ারশেইমার ও স্টিফেন ওয়ালট তাদের বিখ্যাত “The Israel Lobby and US Foreign Policy”- গ্রন্থে ইসরায়েল লবি’র এত শক্তিশালী হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। যথাঃ
১। যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তমনা ও স্বাধীন রাজনৈতিক ব্যবস্থাঃ 
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন রাজনৈতিক পরিমন্ডল, ইসরায়েল লবি’র পরিধি বিস্তারে সহায়তা করছে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ সকল লবি’কেই তাদের মতামত, কার্যক্রম, অনুষ্ঠান প্রভৃতি পালনে যথেষ্ট সুযোগ দেয়, এবং যেহেতু ইসরায়েল লবি’ প্রফেশনাল দিক থেকে অনেক তৎপর, তারা এই সুযোগের সদ্ব্যবহারের সর্বচ্চো চেষ্টা করে যাচ্ছে।   
২। লবি’ প্রতিষ্ঠান সহায়ক যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক সমাজঃ 
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মত, যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ কাঠামোও অনেকটা বহুজাতিক (Pluralist) ও অন্তর্ভুক্তিমূলক (Inclusive)। ফলে, সমাজ কখনো লবি’র কার্যক্রমে বাধা দেয় না যদিনা তা সমাজের শান্তি, নিরাপত্তা বা মূল্যবোধের ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ হয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ লবি’র কার্যক্রমকে খানিক সহায়তাও করে। 
যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক, সামরিক ও আর্থিক সহায়তা ইসরায়েলের জন্য নিরিবিচ্ছিন্ন রাখার পক্ষে ইসরায়েল লবি যখন ক্যাম্পেইন করে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলপন্থি রাজনীতিবিদরা, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সামনে বিষয়টিকে এভাবে উপস্থাপন করে যে, যেহেতু ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র এবং ইসরায়েল- যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধকে ধারন করে, ফলে তাদের সাহায্য করলে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজের কোনরূপ ক্ষতি হবে না। 
কিন্তু যদি সাহায্য না করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক মূল্যবোধ ব্যহত হবে। কিন্তু, বর্তমানের ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যা চালানোর পর, ইউরোপ ও আমেরিকাজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন নীতির বিরুদ্ধে তাদের নাগরিকরা সোচ্চার হয়ে উঠেছে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দৃশ্যমান। 
৩। স্বচ্ছল, উচ্চ-শিক্ষিত ও রাজনৈতিকভাবে তৎপর আমেরিকান ইহুদি সম্প্রদায়ঃ 
ইসরায়েল লবি’ এত শক্তিশালী হওয়ার অন্যতম কারণ এই লবি’র প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা খুবই ধনী, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। ফলে, অন্য যেকোন লবি’র তুলনায় সহজে ও কার্যকারীভাবে ইসরায়েল লবি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও নীতি নির্ধারনী পরিমন্ডলে সহজে ও প্রতাপের সঙ্গে পরিভ্রমন করে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যীয় নীতিকে প্রভাবিত করে থাকে।  
৪। আমেরিকান খৃষ্টানদের সাথে লবি’র একাত্মতাঃ 
যুক্তরাষ্ট্রের ইভাঞ্জেলিকাল খৃষ্টানরা ইসরায়েল লবি’কে সমর্থন দেয়, এবং ইসরায়েল লবি’র উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ইভাঞ্জেলিকাল খৃষ্টানরা বিশ্বাস করে যিশু খৃষ্টের আগমনের প্রেক্ষাপট তৈরির প্রয়োজনে পৃথিবীর অধিকাংশ ইহুদিদের জেরুজালেমে স্থানান্তারিত করতে হবে, এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের গ্রেটার ইসরায়েল নীতিকে সমর্থন দিতে হবে। তারা ইসরায়েল লবি’র কার্যক্রমে সমর্থন জানাতে আমেরিকান নীতি নির্ধারকদের উপরেও বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে থাকে।  
 ৫। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী লবি’র অনুপস্থিতিঃ 
আমেরিকান বৈদেশিক নীতিতে ইসরায়েল লবি’র এত প্রভাবে অন্যতম শক্তির জায়গা হল লবি’র এহেন কার্যাবলি ও প্রচারণার বিপরীতে শক্ত কোন আরব লবি গড়ে না ওঠা। যদিও আরবদের নিয়েও একটা লবি কাজ করে, কিন্তু তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ালিফিকেশন, আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা ও অতি সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকান সমাজের সাথে মিশে যাওয়া সেভাবে আরব লবি’কে ইসরায়েল লবি’র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাড় করাতে পারে নি। 
এছাড়াও, ৯/১১ পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে ইসলামোফোবিয়া বিস্তার ও ইসরায়েল লবি’ সমর্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে আরব মুসলিমদের সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত করার ফলে, আমেরিকান সমাজে আরব মুসলমানদের একীভূত হওয়ার সুযোগ অনেক কমে গেছে। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে ইসরায়েল লবি’র বিপরীতে তাদের ইস্যু গুলোকে আরব লবি’ সেভাবে উপস্থাপন করতে পারছে না। 
উপসংহারঃ 
ইসরায়েল লবি’ নানাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নীতিকে প্রভাবিত করছে। তাদের উদ্দেশ্য একটিঃ যুক্তরাষ্ট্র যেন ইসরায়েলকে দেওয়া কূটনৈতিক, সামরিক ও আর্থিক সাহায্য নিরিবিচ্ছিন্ন রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে তাদের শক্ত উপস্থিতি ও ইসরায়েলপন্থি পলিসি গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মহলে যে তদবীর লবি করে যাচ্ছে, তা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পক্ষে ভ্রূক্ষেপ করা সম্ভব নয়, অন্তত নির্বাচনের পদপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে তো নয়ই। 
অতীতে রিচার্ড নিক্সন ও জিমি কার্টারের মতন রাষ্ট্রপতিরা ইসরায়েল লবি’র প্রভাব থেকে মধ্যপ্রাচ্যীয় নীতি আলাদা করতে চেয়েছিলেন, যার ফলাফলে তাদের সেমেটিক বিরোধী তকমা নিয়ে পরের নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়। বর্তমানে জো বাইডেনও একই কাজ করছেন, এই গণহত্যার পরও ইসরায়েলকে সাহায্য দিয়ে যাচ্ছেন। 
বিশেষত, ২০২৪- এর নির্বাচনকে তার মাথায় রাখতে হচ্ছে। তবে বাইডেন না এসে, ডোনাল্ড ট্রাম্পও যদি যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় পরবর্তী নির্বাচনে আসেন, ইসরায়েলকে নিরিবিচ্ছিন্নভাবে সহায়তা প্রদানের দিকটি সম্ভবত অপরিবর্তিতই থাকবে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সচেতন নাগরিকদের জেগে ওঠা ও আরবদের যুক্তরাষ্ট্রে শক্তভাবে উপস্থিতি ইসরায়েল লবি’র কার্যক্রমকে কিছুটা হলেও দমিয়ে রাখতে পারবে। প্রিয় পাঠক, আপনাদের কি মনে হয়?
🖋 বদিরুজ্জামান
স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Jerusalem Part:
1. ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসন:
2. যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে ইসরায়েল লবি'র প্রভাব
3. BDS আন্দোলন: পশ্চিমে- ইসরায়েলের অবস্থান কাঁপিয়ে দিয়েছিলো যে মুভমেন্ট
4. দ্যা নাকবা (Nakba): ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ফিলিস্তিনি বিপর্যয়


No comments