BDS আন্দোলন: পশ্চিমে- ইসরায়েলের অবস্থান কাঁপিয়ে দিয়েছিলো যে মুভমেন্ট
গতশতকের মতো একবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধেও বিশ্বব্যাপী এক টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উগ্র-সন্ত্রাসবাদের বিকাশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের টুইনটাওয়ারে হামলা, ৯/১১ পরবর্তী “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” ব্যানারকে সামনে রেখে ইংগ-মার্কিন জোটের মধ্যপ্রাচ্যে অনুপ্রবেশ এবং ইরাক-আফগানিস্তান দখল, ২০০৭-৮’র বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মহা মন্দা, মুদ্রামান হ্রাস, আরব বসন্তের নামে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার ক্ষমতার পরিবর্তন, পরবর্তীতে লিবিয়া, ইয়ামেন ও সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের একনায়কতন্ত্র মনোভাব ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির রূঢ় পরিবর্তন, কোভিড মহামারীর ছোবলে অসংখ্য মৃত্যু, ক্রিমায়ার পর সামরিক যুদ্ধে ইউক্রেন-রাশিয়ার অবতীর্ণ হওয়া, এবং অতি সাম্প্রতিক ইসরায়েলের ভূখন্ডে হামাসের আকস্মিক হামলা এবং প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলের চালানো ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা প্রভৃতি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিক্রমাকে চাঙ্গা রেখেছে। 
বিপরীতে,  বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন, জুলুম- অত্যাচার- ও অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, পুজিবাদী সমাজের পদ্ধতিগত শোষণের বিপক্ষে অবস্থান এবং বৃহৎ শক্তিদের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির জোরে এরূপ অহিংস অবস্থানকে নস্যাৎ করার প্রয়াস ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তুলেছে, BDS মুভমেন্ট বা আন্দোলন তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। 
এই নিবন্ধে আমরা BDS Movement নামে বিকশিত হওয়া এক অহিংস আন্দোলন সম্পর্কে জানবো, যার মূল উদ্দেশ্য ছিলো ইস্রাইলের অবৈধ দখলদারিত্ব ও মানবাধিকার লংঘন অপরাধকে পশ্চিমা সভ্য সমাজের সামনে তুলে ধরা, এবং প্রচারণার মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে ইস্রাইলকে বয়কট ও পরিত্যাগ করা। 
BDS মুভমেন্টের উৎপত্তি ও বিকাশঃ
সময়টা ২০০৫ সাল, ইসরায়েলের মানবাধিকার লংঘন ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে পশ্চিম ইউরোপের অবস্থানরত একদল ফিলিস্তিনি এক্টিভিস্ট বিশ্বব্যাপী প্রচারণা চালাতে শুরু করে, যার মূললক্ষ্য থাকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হতে ইসরায়েলকে বয়কট (Boycott), পরিত্যাগ (Divestment), এবং অর্থনৈতিক অবরোধ (Sanctions) দেয়া, যার সামষ্টিক রূপ হল BDS মুভমেন্ট। শুরুর পরপরই এই মুভমেন্ট বিশ্বব্যাপী আন্দোলনে রূপ নেয়- বিশেষত পশ্চিমা দুনিয়ায়।   
আন্দোলনের শুরুতেই বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই মুভমেন্টকে সমর্থন প্রদান করেন। ফলে, দ্রুতই জাতিসংঘ স্বীকৃত ফিলিস্তিনিদের নিয়ে কাজ করা কয়েকশো সংস্থা এই আন্দোলনকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে প্যারিসে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেন।  
আপনি BDS মুভমেন্টের ওয়েবসাইটে (https://bdsmovement.net/) গেলে এই আন্দোলন শুরুর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় লিপিবদ্ধ আছে যে প্রায় ৭০ বছর যাবৎ ইসরায়েল- ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের মূলনীতিগুলোকে অমান্য করে আসছে। ইসরায়েলি শাসকেরা ফিলিস্তিনি জনগণের উপর একটি বর্ণবাদী, দখলদারিত্ব ও ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। এযাবৎ এই কার্যক্রম সম্ভব হয়েছে বৃহৎ আন্তর্জাতিক শক্তির মদদে। বানিজ্য (Corporations) এবং প্রাতিষ্ঠানিক (Institutions) দুনিয়ায় ইসরায়েলের অসম আধিপত্যের দরুণ এই জুলুম ও বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও সমতার ক্ষেত্রে যে প্রচেষ্টা অব্যাহত সে বিষয়টি বরাবরই চাপা পড়ে গেছে।     
আত্ম-নিয়োন্ত্রণ (Self-determination) ও ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধচারণ করতে যে রাজনৈতিক সংগ্রামের দরকার BDS মুভমেন্ট সেক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুভমেন্ট যেমনঃ South African Anti-apartheid Movement, American Indian Movement, the Civil Rights and Black Power movements in the U.S. প্রভৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে। BDS মুভমেন্টে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন মান্য করে ফিলিস্তিনিদেরকে আত্ম নিয়ন্ত্রণের অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে- ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব ও মানবাধিকার লংঘনের বিপক্ষে এই অহিংস মুভমেন্ট পরিচালিত হবে।
তিনটি নির্দিষ্ট দাবীকে সামনে রেখে BDS মুভমেন্ট পরিচালিত হয়েছে। যথাঃ
1.    ইস্রাইলকে আরব-ভূখন্ডে অবৈধ দখলদারিত্ব ও ঔপনিবেশিক শাসন বন্ধ করতে হবে এবং অবশ্যই সীমানা প্রাচীর ভেংগে ফেলতে হবে; 
2.    ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে এবং ইস্রাইলে অবস্থানরত আরব ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রে সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; এবং 
3.    সর্বোপরি, জাতিসংঘের ১৯৪ নম্বর রেজুলেশনকে মেনে নিয়ে ফিলিস্তিন শরনার্থীদের ঘরে ফিরতে দিতে হবে এবং তাদের কব্জা করা সম্পদও ফিরিয়ে দিতে হবে। 
তাদের দাবীগুলো খুবই পরিষ্কার। দুই-রাষ্ট্র নীতি, এক-রাষ্ট্র নীতি ইত্যাদি প্রস্তাবনাকে তারা তখনই মানতে রাজি হবে যখন উপরোক্ত দাবীগুলো মেনে নেয়া হবে এবং কার্যকর দেখা যায়ে। 
BDS মুভমেন্টের প্রতিক্রিয়াঃ
সুচনার পরপরই, BDS মুভমেন্ট প্রথমে ইউরোপে ও উত্তর আমেরিকাকে আলোড়িত করে এবং পরবর্তীতে সমগ্র বিশ্বব্যাপী এ আন্দোলন ছড়িয়ে পরে। বৈশ্বিক প্রচারণার অস্ত্র হিসেবে পরিচালনা পর্ষদ বিভিন্ন বহুজাতিক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে যারা দীর্ঘদিন যাবৎ ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব তৈরিতে সহায়তা করেছে।  ফলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তর্জাতিক মূল্য কমে যেতে শুরু করে, ব্যবসায় বিনিয়োগ কমে আসে এবং সর্বোপরি তাদের আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হতে হয়। 
এই পদ্ধতিতে অনেক কাজে দেয়। অভ্যন্তরীণ চাপের ফলে ২০১৫ সালে ফ্রান্সের বহুজাতিক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান Veolia ইসরায়েলকে দেয়া তাদের বার্ষিক অনুদান ও ভর্তুকি বন্ধ করে এবং ইসরায়েলি মার্কেট থেকে প্রতিষ্ঠান সরে আসতে বাধ্য হয়। পরবর্তী ২০১৬ তে, আইরিশ বৃহৎ কনস্ট্রাকশান কোম্পানি CRH, বৃটিশ নিরাপত্তা কোম্পানি G4S প্রভৃতির মত বড় বড় অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলি মার্কেট থেকে বের হতে শুরু করে।  
একে তো দীর্ঘদিন অসংখ্য ট্রেড ইউনিয়ন এই অহিংস আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছিলো, যখন বয়কটের পর, ইসরায়েলকে পরিত্যগের (Divestment) ঘোষণা বা প্রচারণা শুরু হল- বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, নেদারল্যান্ডস ও স্ক্যান্ডেনেভিয়ানদের পেনশনের টাকা, এবং উত্তর আমেরিকার প্রটেস্ট্যান্ট চার্চগুলো থেকে বড় আকারে অনুদান মুভমেন্টের ফান্ডে আসতে শুরু করে। 
মার্চ ২০১৬ তে BDS মুভমেন্টের পরিচালনা পর্ষদ জাতিসংঘকে ঐ সকল আন্তর্জাতিক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উপাত্ত সংগ্রহে চাপ দেয় যারা দীর্ঘদিন ইসরায়েলের অবৈধ স্থাপনার ক্ষেত্র প্রসারে সহায়তা করে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন একটি রিপোর্ট জমা দেন যেখানে তথ্য-উপাত্তসহ ২০৬ টি আন্তর্জাতিক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়, যারা ফিলিস্তিন ভূখন্ডে অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরির সাথে যুক্ত- যার সিংহভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও ইস্রাইলের।    
পশ্চিমা ইউরোপ, বিশেষত যুক্তরাজ্য ও উত্তর আমেরিকার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী BDS মুভমেন্টের ক্ষেত্র প্রসারে সহায়তা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, ২০১২, সালে Students Justice for Palestine (SJP) নামে এক অহিংস আন্দোলন শুরু হয়, যা বর্তমানেও চলমান আছে। ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় শিক্ষার্থী ইউনিয়ন (NUS)- প্রায় ছয়শত শিক্ষার্থী ইউনিয়ন পরিচালিত BDS মুভমেন্ট সমর্থন প্রদানে দেশব্যাপী প্রচারণা (ক্যাম্প্যেইন) চালায়। এই মুভমেন্টের ক্ষেত্রে আসলেই এটা ছিল এক বড় অর্জন । পরবর্তী বছরে যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ শিক্ষার্থী ইউনিয়ন যেটা ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে পরিচালিত হত তারাও এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে।      
একাডেমিকদের মধ্যেও BDS মুভমেন্টকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, এবং the Association for Asian American Studies, the American Studies Association, the Native American and Indigenous Studies Association, and National Women’s Studies Association প্রভৃতি ডিপার্টমেন্টগুলো- ইসরায়েলি একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট করে, এবং শতশত একাডেমিকরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তারা ইসরায়েলের মদদপুষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করবেন না এবং এগুলোকেও বয়কট করবেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের সমর্থক বিভিন্ন প্রফেসরদের ইসরায়েলকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বয়কট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন।   
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথেসাথে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকেও ইসরায়েলকে বয়কটের জোর প্রচারণা চালানো হয়, এবং অসংখ্য আর্টিস্ট ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ যেমনঃ Alice Walker, Henning Mankell, Roger Waters, Naomi Klein, Ken Loach, Judith Butler, Elvis Costello প্রভৃতি এই প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। শুধুমাত্র ২০১৫ সালেই প্রায় একহাজার যুক্তরাজ্যের আর্টিস্ট বয়কটের পক্ষে স্বাক্ষর প্রদান করেন এবং বিশ্বব্যাপী অন্য আর্টিস্টদেরকেও বয়কট সমর্থনে আহবান জানান। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের সাথে অনেক জনপ্রিয় ফুটবলারের অংশগ্রহণ যেমন মাইকেল বেনেট এই মুভমেন্টকে আরো তীব্র করে।
এই ছিল আমাদের প্রথম পর্বের আলোচনা। আশাকরি আপনারা BDS মুভমেন্টের উৎপত্তি, বিকাশ এবং মুভমেন্টের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়েছেন। পরবর্তী অংশে আমরা দেখানোর চেষ্টা করবো এই তীব্র মুভমেন্ট যাদের স্বার্থে আঘাত করতেছিল অর্থাৎ ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র, তারা কি ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছিলেন এই মুভমেন্টকে দমিয়ে দেয়ার জন্য, এবং আসলেই কি মুভমেন্টটি শেষ হয়ে গিয়েছে, না এখনো চলমান আছে? 
BDS মুভমেন্ট বনাম ইসরায়েলঃ
ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে পশ্চিমা ইউরোপের অবস্থানরত একদল ফিলিস্তিন ও আরব এক্টিভিস্ট বিশ্বব্যাপী প্রচারণা চালানো শুরু করে, যার মূল লক্ষ্য ছিলো আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা হতে ইসরায়েলকে বয়কট, পরিত্যাগ ও অর্থনৈতিকভাবে অবোরধ দেয়া, যার সামষ্টিকরূপ হল BDS মুভমেন্ট। শুরুর পরপরই এই আন্দোলন বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের রূপ নেয়, বিশেষত ইউরোপ ও আমেরিকায়।   
BDS মুভমেন্টের শুরুর দিকটায় তেমন গুরুত্ব না দিলেও, সময়ের সাথে সাথে পশ্চিমা বিশ্বে প্রো-ইসরাইলি গবেষক ও একাডেমিকরা কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পরেন। ২০১০ সালে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরাইলের অন্যতম প্রধান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রেউত ইন্সটিটিউশন, BDS মুভমেন্ট যে ধীরে ধীরে ইসরাইল রাষ্ট্রের আইনগত বৈধতায় বড় বাধা হতে পারে তা ইসরাইল সরকারের নিকট প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের প্রকৃত হুমকি হিসেবে এর আবির্ভাব ঘটেছে তাও উল্ল্যেখ করেন। অবশেষে ২০১৪ সালে, ইসরাইল অফিসিয়ালি BDS মুভমেন্টকে তাদের রাষ্ট্রের বৈধতার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা ও ক্লাসিকাল Anti-Semetic মনোভাবের দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত করেন।  
BDS মুভমেন্টকে কেন্দ্র করে ইসরাইলের অভ্যন্তরে, বিশেষত ডানপন্থী জায়নদের মধ্যে প্রচন্ড রকমের বিরোধিতা দেখা যায়। এই আন্দোলনের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক ক্ষতি ইসরায়েলের জন্য কতটা ধ্বংসাত্মক তা নিরুপনে ২০১৫ সালে নেতানিয়াহুর সরকার একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেন। ২০১৫ সালে দি গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন যে ফিলিস্তিন একটিভিস্টদের পরিচালিত এই বয়কট, পরিত্যাগ ও অর্থনৈতিক অবরোধ প্রচারণা মারাত্মকভাবে ইসরাইল ও তার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ক্ষতি করছে, এবং নেতানিয়াহু দাবী করেন এর পিছনে পরোক্ষভাবে ইন্ধন যুগাচ্ছে ইরান ও ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হামাস। 
২০১৬ র সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আয়েলেত শেকেড, BDS মুভমেন্টকে সন্ত্রাসবাদের একটি শাখা হিসেবে উল্লেখ করেন। এছাড়াও ইসরায়েলের বিভিন্ন মন্ত্রানলয় থেকে এই আন্দোলনকে বিচিত্রভাবে সংজ্ঞায়নের চেষ্টা করা হয়। ঠিক এই লম্বা সময়ে যতবারই ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়েছে ততবারই এই মুভমেন্ট আরো বেশী চাঙ্গা হয়েছে। বর্তমানে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদেও, এই মুভমেন্ট ইউরোপ ও আমেরিকা জুড়ে ইসরায়েলকে বয়কটের আন্দোলন করে যাচ্ছে।    
ধীরে ধীরে পশ্চিমা বিশ্বে ইসরাইলি কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যেক্তিবর্গের আসাকে কেন্দ্র করে রেগুলার মুভমেন্ট চলত। ফলে ইসরাইল আর চুপ না থেকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে উদ্যত হয়। যেমনঃ ২০১৬’য়, ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই মুভমেন্টকে ইসরাইল বৈধ উপায়েই প্রতিহত করবে। ঠিক ঐ-বছরই ইসরায়েল সরকারের পক্ষ হতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয় BDS মুভমেন্টের বিপক্ষে শক্ত ভিত তৈরি করতে। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তারা সাইবার প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে।  পরবর্তীতে কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানি দল ইস্রাইলি কূটনীতিবিদেরা কিভাবে যুক্তরাজ্যের সাইবারকে এই মুভমেন্ট দমনে কাজে লাগিয়েছে তা প্রকাশ করেন।
ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রানলায় Global Forum For Combating Anti-Semitism (GFCA) নামে একটি দ্বি-বার্ষিক ফোরামের আয়োজন করেন। ফোরামে অনেক প্রো-ইসরাইলি গবেষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয় একটাই উদ্দেশ্যে- কিভাবে BDS মুভমেন্টকে দমিয়ে ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবীকে নস্যাৎ করা যায়। ৪ বছর পর, BDS and Delegitimisation Task Force” নামে একটি কার্য-পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এই ফোর্সের মূল দায়িত্বই হবে যেসব দেশে এই অহিংস আন্দোলন চলছে সেখানকার রাষ্ট্রীয় আইনের নিরিখে এই অহিংস আন্দোলনকে একটি সহিংস ও বৈষম্যমূলক মুভমেন্ট হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা। 
AFP পত্রিকার মতে, এক্ষেত্রে ইসরায়েল জন-সমর্থন আদায় না করে মুভমেন্টটাকে দমানোর জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়েছে। ২০১৬ সালে ইসরায়েলের প্রতিনিধি জাতিসংঘে জোর আপত্তি জানায় এই আন্দোলন মূলত ইসরাইল রাষ্ট্রের ভাবমুর্তিতে অনেক বড় আঘাত হানছে যা সম্পূর্ণই বে-আইনি। অবশেষে, ২০১৮ সালে এই মুভমেন্টকে ইসরাইল একটি সন্ত্রাসবাদী আচারণ হিসেবে অফিসিয়ালি গ্রহণ করে-এবং কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন।  
যাইহোক, পশ্চিমা ইউরোপে বেশি একটি সুবিধা না করতে পারলেও যে পরিমান অর্থ ইসরাইলি সরকার যুক্তরাষ্ট্রে ঢেলেছিল এবং তাদের যে ইসরায়েল লবি সেখানে রয়েছে তা রাজনৈতিক ব্যবস্থা, প্রধান মিডিয়া এবং অন্যান্য সহায়ক প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করেছে ইসরাইলের Anti-BDS মুভমেন্টকে বড় আকারে প্রমোট করতে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে BDS মুভমেন্টকে ঘিরে বিভিন্ন মিত্যা তথ্য-গুজব-অপপ্রচার ছড়ানো হয়। BDS মুভমেন্টকে ঘিরে যে ইতিবাচক একটি প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছিলো তাতে ঘুণ ধরানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়। পাশাপাশি মুভমেন্ট বিরোধি বিভিন্ন আইনের খসড়া তৈরি হয় এবং অসংখ্য এক্টিভিস্টদের বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদান করা হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের স্বচ্ছ বিচার-ব্যবস্থার দরুন ইসরায়েলের এই আক্রমনাত্মক নীতি অনেকাংশে ব্যর্থ হয়।                
এই অহিংস আন্দোলনের মাত্রা যত বৃদ্ধি পায়, ইসরাইল থেকে ইসরায়েলি লবি’র উপর চাপ তত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমনকি ২০১৬ সালে ৬০ জন কংগ্রেস সদস্য BDS মুভমেন্টকে সমর্থন প্রদান করেন এবং ইরানের পারমাণবিক চুক্তিকে নিয়ে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন আলোচনাকে রুখে দেন, যেটা আসলেই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত ইসরায়েল লবির বিপক্ষে এক অসামান্য পদক্ষেপ। 
এই ঘটনাইয় ইহুদী লবি খুব নাখোশ হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের উপর চাপ অব্যহত রাখে, এবং ইসরায়েলের সৌভাগ্যবশত, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের সুবাদে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন করা হয় যার মূল কথা- যে সকল নাগরিক এবং কম্পানি BDS মুভমেন্টে কোন ধরণের অংশগ্রহণ করবে তাদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বহাল হবে, এমনকি এই লিস্টে জাতিসঙ্ঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নামও উল্লেখ করা হয় হয়। কিন্তু বিলটি বিভিন্ন মহলের সমালোচনায় ধোপে টিকতে পারেনি। বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ মানবাধিকার সংস্থা American Civil Liberties Union (ACLU) এই ধরণের অগণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমূলক বিলের বিপক্ষে প্রচন্ড সমালোনা করেন। 
পরবর্তীতে জানা যায়, যেসকল  বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে জাতিসঙ্ঘ ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্বের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন- সেই ২০৬ টি বৃহৎ কোম্পানিই এই বিলটি উত্থাপন করতে ট্রাম্প প্রশাসনকে জোর চাপ প্রদান করেছে। উল্লেখ্য জাতিসঙ্ঘ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিন্তু কখনোই বলেনি যে ইসরায়েলকে বয়কট করতে হবে-পক্ষান্তরে তারা সেই সকল বেসরকারি ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছে যারা অবৈধ স্থাপনার সাথে যুক্ত। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশন বলেছে এই বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোই ঐ অঞ্চলের অস্থিতিশীলতাকে উস্কে দেয়- শান্তি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে এবং ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে। তাই এদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি।  
ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে BDS মুভমেন্ট প্রতিরোধ হ্রাস করতে অনেক চেষ্টাই করেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রভাবে জন্য যখন BDS মুভমেন্টকে অবৈধ ঘোষণার কোন আইনি ভিত ইসরায়েল না পায়, তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রো-ইসরায়েলি সমর্থকরা মুভমেন্টের সমর্থকদের উপর নানাবিধ- শারীরিক, মানসিক এবং আইনি আক্রমণ শুরু করে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থী সংগঠনগুলোর উপর এই হামলা ক্যাম্পাসে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, এবং হামলার সাথে আমেরিকার Zionist দলগুলো, বিভিন্ন সরকারি নির্বাচিত কর্মকর্তারা- এমনকি ক্যাম্পাস প্রশাসনেরও অনেকে জড়িত ছিল। এরা সকলে মিলে এই মুভমেন্টকে anti-Semitic আচারণ এবং ক্যাম্পাসের নৈরাজ্যকে anti-Semitic Violation হিসেবে মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রচারণা চালানো শুরু করে। অনেক সময় সরকারি অফিসিয়ালরা কিছু টার্গেট করা আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে- সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে দেয়। 
উদাহরণ হিসেবে “Irvin11” কে উল্লেখ করা যায়। ২০১০ সালে ক্যালেফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রনের প্রতিবাদ করায় ১১ জন মুসলিম শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়- পাশাপাশি রাজ্য এটর্নি জেনারেলের  পক্ষ থেকে তাদের বিপক্ষে সন্ত্রাসবাদের দোষ আরোপ করা হয়, এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। অনেক ছাত্র সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থা চেষ্টা করেও সাজা মওকুফ করাতে পারেনি। এই ঘটনাটি সামগ্রিক মুভমেন্টের উপর দারুণ প্রভাব ফেলে- বিশেষত, বিদেশী শিক্ষার্থীদের উপর।
আরো একটা উদাহরণ দেখা যাক, ২০১৩ সালে ব্রুকলিন কলেজ BDS মুভমেন্টের শীর্ষ দুই ব্যাক্তি Judith Butler ও Omar Barghouti কে নিয়ে BDS মুভমেন্টের উপর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে ,এবং ইভেন্টটি সমগ্র নিউইয়র্কে খুব সাড়া ফেলে দেয়। এই আলোচনাটি বন্ধ করতে প্রো-ইসরাইলি বিভিন্ন প্রফেসর মানববন্ধন করেন, স্থানীয় অফিসিয়াল ও বিভিন্ন ফান্ডিং এজেন্সীগুলো New York City University কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে থাকে যে যদি আলোচনাটি হয়, তবে সকল ধরনের আর্থিক সহয়তা বন্ধ করে দেয়া হবে। 
অবশেষে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। এছাড়াও আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে কিভাবে ইসরায়েলি লবি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোয় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চাপ দিয়ে মুভমেন্টটিকে বানচাল করতে চেয়েছে।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে প্রোইসরাইলি সমর্থকরা মুভমেন্টে অংশগ্রহণকারীদের সরাসরি সন্ত্রাসবাদ ট্যাগে না জড়িয়ে বরং    চরম ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মুভমেন্টকে দমানোর চেষ্টা করেছে। ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড    ক্যামেরনের কনসারভেটিভ পার্টি ঘোষণা করেন- তার সরকার নতুন আইন করতে যাচ্ছে যেখানে রাজনৈতিক মতাদর্শে  প্রভাবিত হয়ে ইস্রাইলকে বয়কট ও পরিত্যাগের প্ররোচনায় নিয়োজিত কর্মী ও সমর্থিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থানেয়া হবে। 
BDS মুভমেন্টের পক্ষে আইনগত যুক্তি ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে মুভমেন্টের পক্ষে পরিচালিত হওয়া ইতিবাচক      প্রচারণা পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মুভমেন্টের পক্ষে মতামত- ক্যামেরনের প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন হতে দেয়নি।  যুক্তরাজ্যের বাহিরে শুধুমাত্র ফ্রান্স রাষ্ট্রীয়ভাবে মুভমেন্টের সমর্থকদের শাস্তির ঘোষণা করে ইসরায়েলকে অনেক সহায়তা করেন। এক্ষেত্রে ফ্রান্স BDS মুভমেন্টকে বর্ণবাদের সাথে তুলনা করেন। ফ্রান্সের দীর্ঘদিন মুসলিম বিরোধী পরিবেশ       এইরূপ শাস্তির বিধান প্রনয়ণ করতে সাহায্য করেছে। 
স্পেনে ইস্রাইলের বর্ণবাদী কার্যক্রমের নিন্দা করে স্থানীয় প্রশাসন Pro-BDS মুভমেন্ট রেজুলেশন পাশ করেন। স্পেনের নিম্ন সংসদ প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন যে তারা এই বয়কট ও পরিত্যগের    প্রচারণাকে প্রসারের ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহায়তা দিবে। অন্যদিকে, নেদারল্যান্ডসের পার্লামেন্ট মুভমেন্টের সহায়তা দানকারী বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বড় অংকের আর্থিক জরিমানার কথা বলে এবং এর পক্ষে নতুন রেজুলেশনও পাশ করে। 
কিন্তু সাধারণ নেদারল্যান্ডসবাসী এই রেজুলেশনকে প্রত্যাক্ষান করেন এবং উপরন্তু বার্ষিক তাদের পেনশনের একটা বড় অংশ এই আন্দোলনের সমর্থনে তারা দান করেন। জার্মানি রাষ্ট্রীয়ভাবে মুভমেন্টের পক্ষে বিপক্ষে কিছুই বলেনি কারণ    ইহুদিদের ক্ষেত্রে তাদের একটা বাজে অভিজ্ঞতা রয়েছে। যদিও জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোয় এই মুভমেন্ট দারুন গতিতে এগিয়েছে। এছাড়াও, ২০১৬ সালে ১৫ টি ইউরোপীয় রাষ্ট্রের প্রায় ২০০    আন্তর্জাতিকমানের আইনজীবী এই আন্দোলনকে বাক-স্বাধীনতার দিক দিয়ে একটি আইনসিদ্ধ আন্দোলন বলেছে।   
উপসংহারঃ 
পরিশেষে আমরা বলতে পারি, BDS মুভমেন্ট ঐতিহাসিকভাবে একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক মুভমেন্ট। এই আন্দোলন অনেক সফল আন্দোলন      থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে। ঐ সফল আন্দোলন যেমন নিষ্পেষণ ও প্রোপাগাণ্ডার শিকার হয়েছে এবং রুখে দাঁড়িয়েছে, এই মুভমেন্টের উপর ইসরায়েলের আক্রমণ যদিও বেড়ে চলেছে, কিন্তু ঠিক একই সময়ে এই মুভমেন্টের পরিধিও বিস্তার  লাভ করছে। 
অনেক নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান- আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে। শত চেষ্টা করেও ইস্রাইলের শক্তিশালী লবি কিছুই করে উঠতে পারছে না। অনেক গবেষকরা আন্দোলনের এই ইতিবাচক দিকটাকে বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতে যে BDS মুভমেন্ট একটি সফল অহিংস আন্দোলনে    রূপ নিবে সেই মতই ব্যক্ত করেছেন।  
বদিরুজ্জামান 
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ 
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 
Jerusalem Part:
1. ইহুদিদের ফিলিস্তিনে অভিবাসন:
2. যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে ইসরায়েল লবি'র প্রভাব
3. BDS আন্দোলন: পশ্চিমে- ইসরায়েলের অবস্থান কাঁপিয়ে দিয়েছিলো যে মুভমেন্ট
4. দ্যা নাকবা (Nakba): ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ফিলিস্তিনি বিপর্যয়


No comments